স্কুলের দরজা খুলতে দেরি, কর্মীকে মারের অভিযোগ

অপরাধ, দরজা খুলতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। আর সেই ‘অপরাধে’ই স্কুলের ৩৫ বছরের পুরনো কর্মীকে সপাটে থাপ্পড়, ঘুষি মারার অভিযোগ উঠল পরিচালন সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫২
Share:

প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। —নিজস্ব চিত্র।

অপরাধ, দরজা খুলতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। আর সেই ‘অপরাধে’ই স্কুলের ৩৫ বছরের পুরনো কর্মীকে সপাটে থাপ্পড়, ঘুষি মারার অভিযোগ উঠল পরিচালন সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পরে বৃহস্পতিবার কাটোয়ার আক্রা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দা, অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশ। দিনভর লাটে উঠল পঠনপাঠন।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার। ওই দিন স্কুলের এক শিক্ষিকার বিদায় সংবর্ধনার অনুষ্ঠান ছিল। দুপুর ৩টে নাগাদ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন সভাপতি প্রভাত মহলাদার এবং উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় নামে পরিচালন সমিতির আরও এক সদস্য। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন স্কুলের দরজা তালাবন্ধ দেখে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হরিপদ আচার্যের নাম ধরে ডাকাডাকি শুরু করেন প্রভাতবাবু। খানিক বাদে দরজা খোলেন রোহিত সাঁতরা নামে এক জন। হরিপদবাবুর ছেলে বিদ্যুৎ আচার্যের অভিযোগ, স্কুলে ঢুকেই গালিগালাজ শুরু করেন সভাপতি। শুধু তাই নয়, হরিপদবাবুকে একপ্রকার টানতে টানতে শিক্ষকদের ঘরে নিয়ে আসা হয় বলেও অভিযোগ। আচমকা বচসা বাধে দু’জনে। অভিযোগ, সভাপতি সপাটে চড়, ঘুষি মারতে শুরু করেন হরিপদবাবুকে। ঘাড়ে ও মাথায় চোট পেয়ে হরিপদবাবু মাটিতে পড়ে গেলে তাঁর শুশ্রূষা করেন শিক্ষকেরা। পরে পরিস্থিতির সামাল দেন প্রধান শিক্ষক বিভাবসু রায়চৌধুরী। ঘটনার প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট করেন স্কুলের ১৮ জন শিক্ষক। ঘটনার পরে হরিপদবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানান তাঁর ছেলে বিদ্যুৎবাবু।

ঘটনার খবর চাউর হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষকের ঘরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শ’খানেক গ্রামবাসী ও পড়ুয়াদের একাংশ। স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, ‘‘আগামী বছর হরিপদবাবু অবসর নেবেন। মারধরের প্রতিবাদ করায় সভাপতি বলেন ‘দেখে নেব’। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’’ রিনি ঘোষ নামে এক অতিথি শিক্ষিকার অভিযোগ, ‘‘উনি সব শিক্ষিকাদের সঙ্গেই অভব্য আচরণ করেন।’’ দশম শ্রেণির পড়ুয়া বিপাশা মণ্ডল, পায়েল ঘোষ, বান্টি আচার্যদের অভিযোগ, ‘‘বই কেনার জন্য সাহায্য চাইলে বা মিড-ডে মিলে একটু বেশি খেতে চাইলেও সভাপতি স্যারে ধমক জোটে।’’

Advertisement

যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে সভাপতির দাবি, ‘‘বচসা হলেও মারধর হয়নি।’’ প্রধান শিক্ষক বিভাবসুবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘ওই দিন হাতাহাতি হয়। তবে বাড়াবাড়ি কিছু হয়নি। কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়লে ব্যবস্থা নেব।’’ কাটোয়া পূর্ব চক্রের স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষও বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এ দিন দুপুরে দাঁইহাট ফাঁড়ির পুলিশ স্কুলে যায়। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে কাটোয়া থানার পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন