আশ্বাস: মহকুমাশাসকের দফতরে আলিমুদ্দিনের পরিবার। নিজস্ব চিত্র
অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের পরিবার দেখা করল দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের সঙ্গে। আলিমুদ্দিন শেখ নামে ওই যুবকের ছেলেমেয়ের পড়াশোনায় যাতে ছেদ না পড়ে সে ব্যাপারে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। আলিমুদ্দিনের যথাযথ চিকিৎসার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
দুর্গাপুর স্টেশন চত্বরে শুক্রবার রাতে আলিমুদ্দিনের গায়ে আগুন ধরানোর অভিযোগ ওঠে স্থানীয় এক হোটেল মালিক সুভাষ অধিকারী ও তার এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। মজা করতে গিয়ে এমন ঘটে গিয়েছে বলে সুভাষরা জানিয়েছিলেন, দাবি ঘটনার সময়ে স্টেশন এলাকায় থাকা কয়েকজন অটো চালকের। তাঁরাই খবর দেওয়ার পরেই আলিমুদ্দিনকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি এখন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শরীরের পিছনের দিকে বেশ কিছুটা অংশ ঝলসে গিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে সুভাষ ও তার ওই কর্মচারী সুবীর সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির ফুলবাড়ি গ্রাম থেকে আলিমুদ্দিনের বাবা ফইজুদ্দিন শেখ এবং স্ত্রী ইরিনা বিবি দুই ছেলেমেয়ে রিয়া খাতুন ও সামিম আখতারকে নিয়ে দুর্গাপুরে আসেন। হাসপাতালে আলিমুদ্দিনকে দেখে তাঁরা যান মহকুমাশাসকের দফতরে। ইরিনা বিবি জানান, পেশায় রাজমিস্ত্রি আলিমুদ্দিনের মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসা চলছিল। মাঝে-মাঝে অসুস্থতা বাড়ে। চিকিৎসার খরচ জোগাতে সব সম্বল শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন কোনও রকমে বিড়ি বেঁধে সংসার চলে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী রিয়া ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া সামিমের পড়াশোনার খরচ কী ভাবে জুটবে, সে নিয়েই তাঁদের দুশ্চিন্তা।
এ দিন স্টেশনের অটোচালক সুবোধ পাণ্ডে, বিজয় সিংহরাও আলিমুদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে মহকুমাশাসকের কাছে আসেন। তাঁরা জানান, আলিমুদ্দিন দিনভর হিন্দি-বাংলা গান শোনাতেন তাঁদের। এমনকী, ফোন নম্বরও বলতে পারতেন। তাই তাঁর ঠিক মতো চিকিৎসা হলে হয়তো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন, আশা তাঁদের।
মহকুমাশাসক আলিমুদ্দিনের ছেলেমেয়ের হাতে চকোলেট দিয়ে জানান, তাদের পড়াশোনা যাতে ব্যাহত না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনিক তদ্বির করবেন। আলিমুদ্দিনের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থারও আশ্বাস দেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিমুদ্দিনের এখনও সুস্থ হতে দিন কয়েক সময় লাগবে। তার পরে কলকাতার কোনও হাসপাতালে তাঁর ভাল চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান মহকুমাশাসক।