কালনায় দখল তুলতে ৭ দিন সময় প্রশাসনের

বুধবার সকালে শহরের পরিস্থিতি দেখতে রাস্তায় নামেন মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া। সঙ্গে ছিলেন প্রশাসনের নানা আধিকারিক ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০১:২১
Share:

নির্দেশ: জিনিস রাখুন দোকানের ভিতরে, বলছেন কালনার মহকুমাশাসক। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

একে শহরের রাস্তাঘাট সরু। তার উপরে ক্রমশ রাস্তায় উঠে এসেছে দোকানপাট। দখল হয়ে গিয়েছে ফুটপাথ। কালনা শহরের এই পরিস্থিতি নিয়ে সরব হচ্ছিলেন বাসিন্দারা। যন্ত্রণার এই ছবি পাল্টাতে এ বার নড়ে বসল প্রশাসন।

Advertisement

বুধবার সকালে শহরের পরিস্থিতি দেখতে রাস্তায় নামেন মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া। সঙ্গে ছিলেন প্রশাসনের নানা আধিকারিক ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা। যে সব দোকানের জিনিসপত্র রাস্তার অংশ দখল করে রাখা হয়েছে, সেগুলির মালিককে সতর্ক করেন মহকুমাশাসক। অনেককে জিনিসপত্র ভিতরে ঢুকিয়ে রাখতেও বাধ্য করেন। পরে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘ধাপে-ধাপে শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। আপাতত তেঁতুলতলা থেকে সিদ্ধেশ্বরী মোড় পর্যন্ত রাস্তা দখলমুক্ত করতে নোটিস পাঠাবে পূর্ত দফতর।’’

শহরবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর বেআইনি ভাবে ফুটপাথ ও রাস্তা দখল করে অনেকে ব্যবসা করায় যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে টোটো, অটোর মতো যানবাহনের দাপট। যার জেরে শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যানজটে হাঁসফাঁস করতে থাকে। এই সমস্যা দিন-দিন বেড়ে চলেছে।

Advertisement

সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে মহকুমা প্রশাসন। সিদ্ধান্ত হয়, ধীরে-ধীরে সমস্যার জট খোলা হবে। বুধবার মহকুমাশাসকের অফিসে একটি বৈঠকে ডাকা হয় কালনা স্টেডিয়াম চত্বরের ব্যবসায়ীদের। সেখানে জানানো হয়, ২৩টি পাকা দোকান পূর্ত দফতরের জায়গা থেকে নিজেদের সীমানায় সরাতে হবে। এ ছাড়াও এলাকায় ৩১টি ছোট দোকানকেও রাস্তা ছাড়তে হবে। বৈঠকে ঠিক হয়, পুনর্বাসন না দেওয়া পর্যন্ত রাস্তা থেকে কিছুটা দূরে ছোট ব্যবসায়ীরা আপাতত ব্যবসা করবেন। তবে তাঁদের একই আকারের দোকান তৈরি করতে হবে। চাকা লাগানো সেই ঘরগুলি এক রঙের হবে। এ ব্যাপারে পুরসভা নির্ধারিত একটি সংস্থা ব্যবসায়ীদের সাহায্য করবে।

এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মহকুমাশাসক তেঁতুলতলা থেকে সিদ্ধেশ্বরী মোড় পায়ে হেঁটে দখল-পরিস্থিতি দেখেন। দেখা যায়, অনেকেই রাস্তার জায়গায় মালপত্র, সাইনবোর্ড লাগিয়ে ব্যবসা করছেন। দোকানের সামনে রাখা সাইকেল, মোটরবাইক, ভ্যান আরও সমস্যা বাড়িয়েছে। দু’পাশের দোকানদারদের মহকুমাশাসক জানিয়ে দেন, নিজের জায়গার মধ্যেই ব্যবসা করতে হবে। অনেককে রাস্তার সীমানা দেখিয়ে বুঝিয়ে দেন, দোকানের অংশ ভেঙে ফেলতে হবে। কেউ নিমরাজি হলে জানানো হয়, এর পরে পূর্ত দফতর সীমানা নির্দিষ্ট করে দেবে। সাত দিনের মধ্যে রাস্তা দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন কর্তারা।

মহকুমাশাসক জানান, যাঁরা ফুটপাথে দীর্ঘ দিন ব্যবসা করছেন, তাঁদের প্রতি প্রশাসন সহানুভূতিশীল। তাঁদের পুনর্বাসন না দেওয়া পর্যন্ত বিশেষ দোকানে ব্যবসা চালাতে হবে। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘তেঁতুলতলা থেকে খেয়াঘাট পর্যন্ত পাকা রাস্তা তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। তার আগে পুরসভাও রাস্তার নানা জায়গা সংস্কারে হাত দেবে। তাই এই উদ্যোগ জরুরি ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন