‘দু’বছর ধরে এলাকার কোনও উন্নয়নের কাজে আপনাকে পাওয়া যায়নি কেন?’— মঙ্গলবার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বছর দু’য়েক পরে সাংসদ অনুপম হাজরাকে পেয়ে এ ভাবেই ক্ষোভ ওগরালেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।
শাসকদলের একাংশ জানায়, বছর তিনেক আগে লোকসভা নির্বাচনের আগে মঙ্গলকোট, কেতুগ্রামের ভোটপ্রচারে অনুপমবাবুর দেখা মিললেও সাংসদ হওয়ার পরে আর এলাকায় দেখা যায়নি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে যেমন ক্ষোভ ছিল, তেমনই ক্ষোভ জমছিল দলের অন্দরেও। নিচুতলার কর্মীদের একাংশের কটাক্ষ, ‘‘সাংসদ কেমন দেখতে তাই তো মনে পড়ে না’’ দলের সভা থেকে শুরু করে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক, অনুষ্ঠানেও সাংসদের দেখা মেলেনি বলে দাবি তাঁদের।
অনুপমের পাল্টা দাবি, ‘‘আমাকে এত দিন কোনও সভা সমিতিতে ডাকা হয়নি। এমনকি কোনও সভার কার্ডে আমার নামের উল্লেখও ছিল না।’’ এর ফলে স্থানীয়দের কাছে সাংসদ সম্পর্কে ভুল বার্তাও গিয়েছে বলেও মনে করেন এই সাংসদ। দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে যাওয়া সেই ‘ভুল’ শোধরাতেই বৈঠকের আয়োজন বলেও তাঁর মত। বিধায়ক মারফত উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয়দের দাবি এলে সেগুলো বিবেচনা করে দেখারও আশ্বাস দেন অনুপমবাবু।
এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক বাসব বন্দোপাধ্যায়, মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি। সঙ্গে ছিলেন কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সাংসদ কোটায় পঞ্চায়েত সমিতিকে নির্বাহী সমিতি হিসাবে মঙ্গলকোটের নিগন পঞ্চায়েতের একটি রাস্তা সংস্কারের জন্য ২০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছেন অনুপম। এ ছাড়াও ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে লাখুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ঘর তৈরি বাবদ ৭ লক্ষ টাকা ও ভাল্যগ্রাম জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘর সংস্কারে ৫ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেন। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে কেতুগ্রাম ২ ব্লকের জন্য ১৬টি নলকূপের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করেছেন। নলকূপ পিছু ৬২ হাজার টাকা হিসাবে ১২টি নলকূপের বরাদ্দ অর্থ ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে বলেও জানা যায়।
বৈঠকে অনুপমবাবু জানান, পানীয় জল, অঙ্গনওয়াড়ি, সুলভ শৌচাগারের বিষয়ে বিশদে তথ্য পেলে সেগুলোর ক্ষেত্রেরও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এ ছাড়াও বিধায়ক তহবিলের বরাদ্দ ১৫ লক্ষ টাকায় মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সংস্কারের কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে। ওই খাতে আরও ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন বিধায়ক।