ভাতকুণ্ডার এই সব রাস্তাগুলিতেই বারবার ঘটছে ছিনতাই।—নিজস্ব চিত্র।
রাস্তায় গাছ ফেলে বা অন্য কোনও ভাবে গাড়ি আটকে মাস দু’য়েক ধরে ছিনতাই চলছে বুদবুদ ও আউশগ্রাম থানার অন্তর্গত বেশ কয়েকটি রাস্তায়। বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তাগুলিতে পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হোক।
বুদবুদ থানা এলাকার মধ্যে রয়েছে ভাতকুণ্ডা গ্রাম। গ্রামের একটু পরেই শুরু আউশগ্রাম থানার এলাকা। গ্রামটির একদিকে রয়েছে মানকর যাওয়ার রাস্তা। অন্যদিকে রয়েছে পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তা। ওই সংযোগকারী রাস্তাটি পরে মিশছে কাঁকসা থানার ত্রিলোকচন্দ্রপুর মোড়ে। ভাতকুন্ডা মোড় পেরোলেই ওই সংযোগকারী রাস্তাটির চারদিকে শুরু হয় জঙ্গল। এই জঙ্গলের মধ্যে গাছ ফেলেই বারবার ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৯ জুন গভীর রাতে দেবশালা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দাদের একটি দল পাশের গ্রাম থেকে কীর্তন শুনে ফিরছিলেন। ভাতুকুণ্ডা মোড় পেরিয়ে ওই রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় গাড়িটি ছিনতাইবাজদের কবলে পড়ে। গাড়ির পুরুষ যাত্রীদের মারধর করা হয়। অভিযোগ, দলের মহিলাদের সঙ্গে থাকা সোনার গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ছিনতাইবাজরা। গাড়ির চালক স্বরূপ বক্সির অভিযোগ, ‘‘দূর থেকে বোঝা যায় না রাস্তায় কী রয়েছে। সামনে গেলে দেখা যায় গাছ পড়ে রয়েছে। রাস্তার দু’পাশেই জঙ্গল থাকায় ছিনতাইবাজদের গা ঢাকা দিতেও সুবিধা হয়।
তবে শুধু ওই রাস্তাটিই নয়। ভাতকুণ্ডা থেকে মানকর বা মোরবাঁধ যাওয়ার রাস্তাতেও একই ভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে বারবার। একই ভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে আউশগ্রাম থানার বিভিন্ন রাস্তাতেও। ভাতকুণ্ডা থেকে বননবগ্রাম যাওয়ার পথেও বিভিন্ন সময়ে গাড়ি আটকে ছিনতাই হয় বলে জানান বাসিন্দারা। যেমন, দিন কয়েক আগেই আউশগ্রামের বাবুইশোলের কাছে বেশকিছু গাড়ি আটকে ছিনতাই করা হয়।
দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সি জানান, ছিনতাইবাজদের উৎপাতের জেরে রাতের বেলায় গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কোনও গাড়ি ওই রাস্তা ধরে হাসপাতালে যেতে চাইছে না। এর জেরে বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। রাস্তাগুলিতে পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই বুদবুদ থানায় একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে বলে জানান শ্যামলবাবু।
বুদবুদ থানার পুলিশের সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, ছিনতাই আটকাতে ইতিমধ্যেই রাস্তায় টহলদারির গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। রাস্তার উপরেও পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের এক কর্তা জানান, ছিনতাই আটকাতে বুদবুদ ও আউশগ্রাম থানার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। রাতভর ওই সব এলাকার রাস্তাগুলিতে পুলিশ রাখারও ভাবনাচিন্তা চলছে।