ভাঙার-মুখে: কেশবগঞ্জ চটিতে দাগ দেওয়া বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
পরের সপ্তাহ থেকেই বর্ধমান শহরের ভেতর দিয়ে যাওয়া জিটি রোড সম্প্রসারণের জন্য জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকের পর জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “জিটি রোডের উল্লাস মোড় থেকে নবাবহাট মোড় পর্যন্ত রাস্তা চওড়া ও সৌন্দর্যায়ন করা হবে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, রাস্তা চওড়া, সৌন্দর্যায়ন ও আলোর ব্যবস্থা করের জন্য ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। প্রথম দফায় উল্লাস মোড় থেকে বীরহাটা ও নবাবহাট মোড় থেকে পঞ্জাবি মোড় পর্যন্ত ওই কাজ হবে। গত ১১ এপ্রিল কাজের বরাত পেয়ে গিয়েছে বহরমপুরের একটি ঠিকাদার সংস্থা। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জবরদখলকারীদের সরে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছে পূর্ত দফর। দু’বার মাইকে করেও প্রচার চালানো হয়েছে। প্রচারে অনেকটা কাজ হয়েছে বলেও পূর্ত দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশ লাইন বাজারে সরছে দোকান। নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার দেখা যায়, অনেকেই দোকান, ঝুপড়ির অস্থায়ী কাঠামো ভেঙে জায়গা খালি করে দিচ্ছেন। পুলিশ লাইন বাজারের কাছে উত্তম দেবনাথ, সমীর দত্ত, চিত্তরঞ্জন বসাকেরা বলেন, “উন্নয়নের স্বার্থেই আমরা কোনও বাঁধা না দিয়ে নিজেদের দোকান সরিয়ে নিচ্ছি।” এর আগেও ২০০১ সালে বাম জমানায় রাস্তা সম্প্রসারণ করার জন্য জবরদখলকারী সরে যাওয়ার নির্দেশ এসেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি।
ওই অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, “আমরা সাধ্যমত দোকান ঘর সরিয়ে নিয়েছি, কিন্তু জবরদখলকারীদের মধ্যে চারটে নার্সিংহোম, লেদ কারখানা, বড় বড় দোকান রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁরা বহাল তবিয়তেই রয়েছে।” পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, নবাবহাট থেকে পঞ্জাবি মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকে আড়াইশোটির মতো স্থায়ী-অস্থায়ী দোকান ঘর রয়েছে।
এ ছাড়াও সম্প্রসারণের জন্য গোটা রাস্তায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৭৮টি গাছ কাটা পড়বে বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটা পড়া নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে একাধিক সংগঠন। এখানেো তেমন কিছু হবে না তো? পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার অপূর্ব কোনারের অবশ্য দাবি, “বন দফতরের কাছ থেকে গাছ কাটার অনুমতি মিলেছে। ওই রাস্তায় নতুন গাছ লাগানো ও সৌন্দর্যায়নের জন্য প্রায় চার কোটি টাকা খরচ করা হবে।”