জোরকদমে: চলছে রাস্তা সারাই। দামোদরের মানা চরে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
দুর্যোগে রাস্তা ভেঙে গেলে বাসিন্দাদের সাহায্য করা হোক বা রাস্তার ধারে সাফাই অভিযান, সবেতেই দেখা মেলে ওঁদের। স্বেচ্ছাশ্রমের বদলে মেলে নিখরচায় প্রশিক্ষণ, চাকরির প্রস্তুতিতে। প্রায় দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে এ ভাবেই সামাজিক কাজে যোগ দেন পেশায় রেলকর্মী কঙ্কন গায়েন এবং তাঁর ছাত্রছাত্রীরা।
আদতে উত্তর ২৪ পরগনার মসলন্দপুরের বাসিন্দা কঙ্কনবাবু ২০০৭ সালে আসেন দুর্গাপুরে। থাকেন রবীন্দ্রপল্লিতে। এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচশো জনকে তিনি নিখরচায় চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বদলে শর্ত একটাই, সামাজিক কাজকর্মে যোগ দিতে হবে। সেই কাজকর্মের সুবিধার জন্য ২০০৫ সালে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরি পাওয়া ন’জনকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি হয় ‘অম্বেঢকর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’। এই সোসাইটির সদস্যরাই নিয়ম করে চাঁদা দেন, সামাজিক কাজকর্মের জন্য।
কী ভাবে হয় সেই কাজ? দুর্গাপুর শহরের অদূরেই, দামোদরের পাড়ে রয়েছে বাঁকুড়ার বড়মানা, ছোটমানা। অনেক সময়েই বৃষ্টিতে বা দামোদর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হলে এই এলাকাগুলির একাংশ ডুবে যায়। ভেঙে যায় বাঁধ-রাস্তা। জল নামলেও যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ে। কঙ্কনবাবুর ছাত্র-ছাত্রীরা সেই সময়েই এগিয়ে আসেন।
যেমন, সীতারামপুর মানায় গত বার বাঁশের খাঁচা দিয়ে অস্থায়ী সেতু তৈরি করেন ছাত্র-ছাত্রীরা। আগাছা সাফ, রাস্তা সংস্কার-সহ নানা কাজেও দেখা যায় তাঁদের। কঙ্কনবাবু জানান, আজ, শনিবার বড়মানা ও ছোটমানার মাঝে সংযোগকারী একটি রাস্তা মাটি ফেলে প্রাথমিক ভাবে তৈরি করবেন তাঁরাই। কেন এ সব কাজ? কঙ্কনবাবুর দাবি, ‘‘পড়াশোনার পাশাপাশি চরিত্রের ঠিক বিকাশের জন্যই এমনটা।’’
প্রশিক্ষণ নিতে আসা মনিকা সরকার, বিপ্লব হালদারেরা বলেন, ‘‘এ ভাবে সমাজসেবার কাজে জড়িয়ে যাব ভাবিনি। খুব ভাল লাগছে।’’