আত্মহত্যা না খুন, দেহ উদ্ধারে ধন্দ

পড়শিদের অভিযোগ, শুক্রবার রাতেও শান্তিদেবীকে মারধর করেন বিকাশবাবু ও তাঁর স্ত্রী। শান্তিদেবীর কান্নার শব্দও শোনা যায় বলে দাবি পড়শিদের।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:২৫
Share:

এই ঘরেই মেলে দেহ। নিজস্ব চিত্র

এক বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার হয়েছে কালনা শহরে। শনিবার রাতে দেহ উদ্ধারের পরে তদন্তকারী থেকে পড়শি, সকলেই ধন্দে, শান্তি দাস (৬৫) নামে ওই বৃদ্ধা খুন হয়েছেন, না কি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে মৃতার ভাইঝি, সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সংবাদমাধ্যমের কাছে রবিবার দাবি করে, ‘রাতে জেঠু পিসিকে বলছিল, এত লোক মরে, তুই মরিস না কেন।’ এই ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মৃতার সেজো ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, শহরের নেপপাড়া এলাকায় পৈতৃক বাড়িতে থাকতেন অবিবাহিতা ওই মহিলা। পাশেই কয়েকটি ঘরে থাকেন দুই ভাই বিকাশবাবু, বিশ্বজিৎবাবু এবং তাঁদের পরিবার। পড়শি এবং বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ, সেজো ভাই বিকাশ এবং তাঁর স্ত্রী প্রায়শই কখনও দিদির সঞ্চিত টাকা আত্মসাৎ, কখনও বা সাধারণ কোনও ছুতোই মারধর করতেন।

প্রতিবাদ করলে, তাঁদের অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হতো বলেও দাবি বিশ্বজিৎবাবুর। পড়শিদের অভিযোগ, শুক্রবার রাতেও শান্তিদেবীকে মারধর করেন বিকাশবাবু ও তাঁর স্ত্রী। শান্তিদেবীর কান্নার শব্দও শোনা যায় বলে দাবি পড়শিদের। যদিও এক পড়শির দাবি, ‘‘রাত ১২টার পরে আর শব্দ পাইনি।’’ পুলিশ জানায়, ওই রাতে মারধরের ফলে শান্তিদেবীর কান্নার আওয়াজ মোবাইলে রেকর্ড করে বিশ্বজিৎবাবুর মেয়ে, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী শিল্পা।

Advertisement

কালনা থানার পুলিশ জানায়, এর পরে বিকাশবাবুই শনিবার রাতে খবর দেন, ঘরে পড়ে রয়েছে দিদির দেহ। ওই রাতেই এক তলার ঘরের মেঝে থেকে শান্তিদেবীর পোড়া দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় বিকাশবাবুকে। রবিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে, ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

কিন্তু সেক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দ রয়েছে। তদন্তকারীদের একাংশের প্রাথমিক অনুমান, ওই মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন। যদিও পুলিশকর্মী ও পড়শিদের একাংশের দাবি, যে ঘরে দেহ মেলে, সেখানে পোড়া কাপড়ের টুকরো, কেরোসিনের বোতল দেখা গিয়েছে। তবে, ঘরের আর কোথাও আগুন ধরার চিহ্ন নেই। তবে পুলিশকর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মহিলার মৃত্যু হলে তা অবশ্যই টের পেতেন বিশ্বজিৎবাবু ও তাঁর পড়শিরা। যদিও বিশ্বজিৎবাবু এবং পড়শিদের দাবি, রাতে পোড়া গন্ধ বা চিৎকারও পাননি। মহিলার মৃত্যু শুক্র না শনি, কোন দিন হয়েছে, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই অনেক ধন্দ পরিষ্কার হবে।

এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘কী কারণে, কী ভাবেই বা মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন