চোর সন্দেহে বেঁধে মার মৃগী রোগীকে

রবিবার রাতে আসানসোলে পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, যুবকটি চুরিতে জড়িত নন। জনতার হাতে মার খাওয়ার পরে তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত হন। যুবকটি বা তাঁর পরিবার অভিযোগ জানাননি। কিন্তু কোনও বাসিন্দার মোবাইলে তোলা ওই ঘটনার ভিডিও ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়তে এমন আচরণের প্রতিবাদ করেন শহরের অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৩
Share:

বন্দি: শিকলে বেঁধে মার যুবককে। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

রাতে কাজ শেষে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন যুবক। হঠাৎ এক মহিলা তাঁকে মোবাইল চোর সন্দেহ করে চিৎকার জোড়েন। সেই সন্দেহের বশেই শিকলে বেঁধে মারধর করা হয় মৃগী রোগী ওই যুবককে।

Advertisement

রবিবার রাতে আসানসোলে পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, যুবকটি চুরিতে জড়িত নন। জনতার হাতে মার খাওয়ার পরে তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত হন। যুবকটি বা তাঁর পরিবার অভিযোগ জানাননি। কিন্তু কোনও বাসিন্দার মোবাইলে তোলা ওই ঘটনার ভিডিও ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়তে এমন আচরণের প্রতিবাদ করেন শহরের অনেকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বছর পঁচিশের ওই যুবক আসানসোল বাজারে কাপড়ের দোকানের কর্মী। রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তিনি ডুরান্ড কলোনির রাস্তা ধরে মহিশীলায় বাড়ি ফিরছিলেন। হাতে ছিল নিজের মোবাইল। তখনই পথচারী এক মহিলা তাঁর দিকে আঙুল তুলে ‘মোবাইল চোর’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। জনতা তাঁকে ধরে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। চড়, কিল, ঘুষিও মারা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (‌‌‌‌সেন্ট্রাল) জে মার্সি বলেন, ‘‘তদন্তে জানা যায়, ওই যুবক কারও মোবাইল চুরি করেননি। কেউ চুরির অভিযোগ করতেও থানায় আসেনি।’’ তিনি জানান, ওই যুবককে মারধরের লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা করতে চাননি। প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পরে তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। যুবক ও তাঁর পরিবারের বক্তব্য, এলাকায় থাকতে সমস্যা হতে পারে আশঙ্কায় তাঁরা অভিযোগ করতে চাননি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই এলাকায় সম্প্রতি কয়েকটি মোবাইল চুরি গিয়েছে। কিন্তু স্রেফ সন্দেহের বশে এমন আক্রমণের নিন্দা করেছেন শহরের অনেকেই। প্রবীণ চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত জানান, তাড়া খেয়ে ভয়েই হয়তো ওই যুবক মৃগীতে আক্রান্ত হন। এই ঘটনার আতঙ্ক মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে ক্ষতিকর হতে পারে বলে মত ওই ডাক্তারের। অরুণাভবাবু বলেন, ‘‘সভ্য সমাজে এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত। তবে এটা গোটা শহরের মুখ নয়। কিছু উটকো লোকের কাণ্ড। এমন ঘটলে, বাকি শহরকে প্রতিবাদ করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন