বুধবার সকালে বিসি রোডে দোকানের সামনে। নিজস্ব চিত্র
দোকানের সারা বছরের ছবিটা পাল্টে যায় বছরের এই একটি দিনে। সকালে পুজো, মূর্তি ও ছবিতে মাল্যদান করে শুরু হয়। তার পরে চলে দোকানের সামনে দেদার লাড্ডু বিলি। ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুকে এ ভাবেই স্মরণ করেন বর্ধমানের বিসি রোডের মিষ্টি ব্যবসায়ী। ৭৯ বছর আগে তাঁর দোকানে পা পড়েছিল নেতাজির।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৯৪০ সালে মিষ্টির দোকানটি চালু করেন গোবিন্দ্রচন্দ্র নাগ। তার আগেই শৈলেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, সুবোধ মুখোপাধ্যায়, বামাপতি ভট্টাচার্যের মতো কয়েকজনের মাধ্যমে নেতাজির সান্নিধ্য পেয়েছিলেন তিনি। তাই নিজের দোকান প্রতিষ্ঠা করেন ২৩ জানুয়ারি, প্রিয় নেতার জন্মদিনে। দোকানের নামও দেন নেতাজির নামেই। দোকান প্রতিষ্ঠার কিছু দিনের মধ্যে বর্ধমানে আসেন সুভাষচন্দ্র। তিনি বিসি রোড দিয়ে যাওয়ার সময়ে গোবিন্দবাবু তাঁকে দোকানে আসার জন্য অনুরোধ করেন। নেতাজি সেই অনুরোধ রক্ষা করেছিলেন, জানান গোবিন্দবাবুর পরিবারের সদস্যেরা।
এর পরেই গোবিন্দবাবু প্রতি বছর নেতাজির জন্মদিন পালন করা শুরু করেন। ২৩ জানুয়ারি লাড্ডু বিলি করতেন তিনি। সেই ধারা এখনও চলে আসছে। গোবিন্দবাবুর একমাত্র মেয়ে রমাদেবীর ছেলে সৌমেন দাস এখনও রীতি বজায় রেখেছেন। এখন ২৩ জানুয়ারি প্রায় পাঁচ হাজার লাড্ডু বিতরণ করেন বলে জানান তিনি।
এ দিন সকালে দোকানে গিয়ে দেখা যায়, নেতাজির ছবি ও মূর্তিতে মালা পরানো হয়েছে। পুরোহিত পুজো করছেন। নারকেল ফাটিয়ে পুজো শেষ করে শুরু হয় লাড্ডু বিতরণ। সৌমেনবাবু দাঁড়িয়ে থেকে পথচলতি মানুষজনের হাতে লাড্ডু তুলে দেন। তিনি জানান, পুরনো ক্রেতাদের কাছে প্যাকেটে করে লাড্ডু পৌঁছে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘নেতাজি আমাদের পরিবারের কাছে এক আবেগ। তাই এই প্রথা চলে আসছে।’’