উত্ত্যক্ত করত ধৃত, নালিশ পরিবারের

উত্তরপ্রদেশ থেকে মাঝে-মধ্যেই দুর্গাপুরে আসত সে। খুনে অভিযুক্ত প্রদীপ চৌহান তাঁদের নানা রকম হুমকি দিত ও উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ নিহত তপন মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির লোকজনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০৫:০৮
Share:

ধৃত প্রদীপ। ছবি: বিকাশ মশান

উত্তরপ্রদেশ থেকে মাঝে-মধ্যেই দুর্গাপুরে আসত সে। খুনে অভিযুক্ত প্রদীপ চৌহান তাঁদের নানা রকম হুমকি দিত ও উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ নিহত তপন মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির লোকজনের। পুলিশের দাবি, প্রদীপ অবশ্য জেরায় জানিয়েছে, ওই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল।

Advertisement

ভিড়িঙ্গি হাইস্কুলের প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক তপনবাবুর স্ত্রী সুনন্দাদেবী বলেন, ‘‘আমার মেয়ের সঙ্গে ফোনে প্রদীপের যোগাযোগ হয়। ওর নিয়মিত হুমকিতে আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ও আমাদের আতঙ্কে রেখেছে।’’ তাঁর দাবি, তাঁদের বড় বাড়ি, সম্পত্তির লোভে মরিয়া হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে প্রদীপ। স্থানীয় কেউ ওর সঙ্গে আছে বলে তাঁদের ধারণা। মেয়ে শিবানীর অভিযোগ, ‘‘বেশ কয়েকজন আমাকে বিরক্ত করত। প্রদীপ তাদের মধ্যে এক জন। বছর দেড়েক ধরে ও নানা ভাবে আমাকে উত্ত্যক্ত করছে। পুলিশকে সব জানিয়েছি।’’

তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, তপনবাবুর বাড়িতে প্রদীপের যাতায়াত ছিল। ঘটনার সময়ে বাড়ির প্রধান গেট বন্ধ ছিল। পিছনের দিকে অস্থায়ী গেট দিয়ে ভিতরে ঢোকে সে। তা থেকে পরিষ্কার, সে আগেও এসেছে এই বাড়িতে। পুলিশের দাবি, জেরায় প্রদীপ জানিয়েছে, মাঝে-মাঝেই সে দুর্গাপুরে আসত। ভিড়িঙ্গির কাছে জাতীয় সড়কের ধারে একটি হোটেলে উঠত। তপনবাবুর স্ত্রী হাসপাতালে ‘নাইট ডিউটি’তে বেরিয়ে গেলে সে ওই বাড়িতে যেত। ভোরে আবার ফিরে আসত হোটেলে। গত বছর শেষ দিকে শেষ বার ওই বাড়িতে গিয়েছিল সে। তপনবাবু জানতে পেরে প্রতিবাদ করেছিলেন, দাবি করেছে প্রদীপ।

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, দুই বন্ধুর সঙ্গে প্রদীপ ১৯ অগস্ট ফের দুর্গাপুরে আসে। পর দিন তার বন্ধুরা ফিরে যায়। পুলিশের দাবি, প্রদীপ জানিয়েছে, তার পরে বেশ কয়েক বার সে ওই বাড়িতে গিয়েছে। রবিবার রাতে ফের যেতেই তপনবাবু তাকে দেখে চিৎকার করে ওঠেন। দু’জনের হাতাহাতি শুরু হয়। তখনই প্রদীপ ভোজালির কোপ মারতে শুরু করে বলে অনুমান পুলিশের।

পুলিশ জানায়, ধৃতকে আরও জেরা করা হবে। প্রয়োজনে তার সঙ্গে শিবানীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করাও হতে পারে। ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী শুধু বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় আর কারও যোগ পাওয়া যায়নি। কী কারণে খুন, ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।’’

নিয়মিত বাড়িতে প্রদীপের যাতায়াতের কথা অবশ্য তপনবাবুর বাড়ির লোকজন মানতে চাননি। শিবানী বলেন, ‘‘প্রদীপ নানা সময়ে পিছু নিত। ওর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক বা আমাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল না।’’ তপনবাবুর দীর্ঘদিনের সহকর্মী তথা কংগ্রেস নেতা সুদেব রায় দাবি করেন, ‘‘মিষ্টভাষী তপনবাবুর কোনও শত্রু ছিল বলে জানি না। তবে পুলিশ সক্রিয় হলে এমন ঘটনা ঘটত না।’’ সুনন্দাদেবী বলেন, ‘‘প্রদীপের কঠোর সাজা চাই আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন