নিয়ম মানছে কে। ঝুলছে মশলার প্যাকেট। নিজস্ব চিত্র
এ বার কোনও আবেদন-নিবেদন নয়। গুটখা, প্লাস্টিক, অবৈধ জলের সংযোগ ও নির্মাণ রুখতে বিশেষ ‘টাস্কফোর্স’ গঠন করেছেন আসানসোল পুর কর্তৃপক্ষ। পয়লা এপ্রিল থেকেই এই সব কারবার রোধে অভিযান শুরু করবে টাস্কফোর্স। কোনও এলাকা থেকে এই অবৈধ কাজ কারবারের খবর এলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা নেবেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। অবৈধ কাজে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আসানসোল পুরসভা এলাকায় গুটখা বিক্রি ও পলিথিন প্যাকেটের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু প্রায় দেড় মাস কেটে গেলেও এ সবের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। লুকিয়ে-চুরিয়ে নয়, একেবারে প্রকাশ্যে দোকান, বাজারে গুটখার পাউচ টাঙিয়ে কেনা বেচা চলছে। বার্নপুর, কুলটি, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, আসানসোল সর্বত্রই একই চিত্র। আসানসোল পুরসভা সংলগ্ন স্টেশন রোডে দেখা গেল, থরে থরে সাজানো আছে গুটখার প্যাকেট। স্থানীয় দোকান মালিক দীপক গুপ্ত বলেন, ‘‘প্রথম প্রথম লুকিয়ে বিক্রি করছিলাম। কিন্তু কেউ নজর রাখছে না দেখে এখন সামনেই ঝুলিয়ে বিক্রি করছি।’’ তথৈবচ প্লাস্টিকের ব্যবহারও। জরিমানার ভয়ে শহরাঞ্চলের স্থায়ী দোকানগুলিতে বিক্রেতারা পলিথিনের প্যাকেট রাখছেন না। কিন্তু ফুটপাতের উপরে ফল, মিষ্টি, তেলেভাজার দোকান বা আনাজ, মাছের বাজারে রমরম করে পলিথিনের প্যাকেটে ভরে জিনিসপত্রের আদান-প্রদান চলছে। পুরসভা এলাকায় গুটখা বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্তকে কুর্ণিশ করেছিলেন শহরবাসী। কিন্তু দেড়মাস পেরিয়ে গেলেও আশানুরূপ ফল না মেলায় নাগরিকদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
ঘোষণার পরেও এ সব বন্ধ করার ব্যাপারে অনেকেই অনীহা দেখাচ্ছেন তা বুঝেছেন পুর কর্তৃপক্ষও। কেন পুর কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? উত্তরে পুরসভার মুখ্য বাস্তুকার সুকোমল মণ্ডল বলেন, ‘‘আর অনুনয়-বিনয় করা হবে না। এ বার এ সব অবৈধ কাজ কারবারের খবর পেলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছবে পুরসভার বিশেষ টাস্কফোর্সের সদস্যরা। তাঁরা এ সব নষ্ট করে দেবেন।’’ তিনি জানিয়েছেন, শুধু গুটখা, প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করাই নয়, পুরসভার কাছে ইদানিং এলাকায় অবৈধ নির্মাণ ও জলের অবৈধ সংযোগ জুড়ে নেওয়ার অভিযোগ জমা পড়ছে। এ সব বন্ধ করতেই উদ্যোগী হবে ওই টাস্কফোর্সের সদস্যরা। সহজে যাতে খবর মেলে, তার জন্য সাধারণ মানুষদের একটি ‘টোল ফ্রি’ নম্বর দেওয়া হবে। সচেতন নাগরিকেরা ওই নম্বরে ফোন করলেই টাস্কফোর্স সংশ্লিষ্ট এলাকায় পৌঁছে যাবে এবং ব্যবস্থা নেবেন। তবে ওই সদস্যরা যাতে কখনওই নিজেদের হাতে আইন তুলে নিতে না পারেন, সব সময় নজরে রাখবেন পুরসভার একজন কাউন্সিলর ও একজন আধিকারিক বলে জানিয়েছেন সুকোমলবাবু।