টুকতে বাধা, মুখ ফাটল শিক্ষকের

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় ইট ছুড়ে শিক্ষকের মুখ ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কাটোয়ায়। পরীক্ষাকেন্দ্র, কাশীরাম দাস ইনস্টিটিউশনের (‌কেডিআই) এক শিক্ষিকার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে ওই পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০০:৫১
Share:

প্রহৃত: হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষক টোটোন মল্লিক। নিজস্ব চিত্র

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় ইট ছুড়ে শিক্ষকের মুখ ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কাটোয়ায়। পরীক্ষাকেন্দ্র, কাশীরাম দাস ইনস্টিটিউশনের (‌কেডিআই) এক শিক্ষিকার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে ওই পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। পরে কেডিআই-এর কিছু ছাত্র আবার অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের পাল্টা মারধর করে। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার এবং আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটের দু’টি পরীক্ষাকেন্দ্রেও নকল করতে গিয়ে বাধা পেয়ে স্কুলে ভাঙচুর চালানোয় অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীরা।

Advertisement

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষককে আঘাত করা, শিক্ষিকাকে নিগ্রহ—গুরুতর অভিযোগ। সে বিষয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। জেলা স্কুল পরিদর্শককেও বলেছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।’’ তাঁর বার্তা, ‘‘কোনও অবস্থাতেই টোকাটুকি বরদাস্ত করা হবে না।’’

সোমবার কেডিআইয়ে কাটোয়ার অন্য দু’টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা দিচ্ছিল। এক তলার ৩৯ নম্বর ঘরে নজরদারি করছিলেন কেডিআইয়ের শিক্ষক টোটন মল্লিক ও আক্রা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পামেলি যশ। কেডিআই কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষা শুরু হতে কিছু ছাত্র টোকাটুকির চেষ্টা করছিল। পামেলিদেবী এবং টোটনবাবু বাধা দেওয়ায় তারা সুবিধা করতে পারেনি। সেই রাগে দুপুর ১টা নাগাদ খাতা জমা দেওয়ার সময় কিছু পরীক্ষার্থী বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

Advertisement

পামেলিদেবীর অভিযোগ, ‘‘টুকতে বাধা দেওয়ায় আমাকে যা-তা কথা বলছিল কয়েকটা ছেলে। টোটোনবাবু রুখে দাঁড়াতেই ওরা ওঁর উপরে চড়াও হয়। একটা ছেলে ক্লাসের বাইরে থেকে একটা ইট তুলে ছুড়ে মারে ওঁকে। মুখ ফেটে সঙ্গে সঙ্গে গলগলিয়ে রক্ত!’’

উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা শেষ হতেই কেডিআইয়ে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। ফলে, সেই সময়ে স্কুলে হাজির ছিল কিছু ছাত্র। তাদের একাংশ আবার ওই পরীক্ষার্থীদের উপরে ইট নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তিন পরীক্ষার্থী জখম হয়। বছর চল্লিশের টোটোনবাবুকে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। টোটনবাবু বলেন, ‘‘টোকাটুকিতে বাধা পেলে পরীক্ষা শেষের দিন বেঞ্চ-টেবিল ভাঙা, পাখার ব্লেড বাঁকানোর মতো ঘটনা হয়ে থাকে। কিন্তু এ দিন যা হল, ভাবা যায় না!’’

অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের দাবি, তারা টোকাটুকি করেনি। হাসাহাসি করায় টোটনবাবু এবং পামেলিদেবী বকাঝকা করেন। তাদের কথায়, ‘‘ওই শিক্ষককে কে মেরেছে জানি না।’’ তবে ওই পরীক্ষার্থীরা যে স্কুলের ছাত্র, তার প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্তে আমাদের ছাত্রেরা দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত শাস্তি দেবে প্রশাসন।’’

কেডিআই-এর প্রধান শিক্ষক সুধীনকুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, সহকর্মী শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশের দ্বারস্থ হবেন। জেলা স্কুল পরিদর্শক (বর্ধমান) খগেন্দ্রনাথ রায় জানান, এ ব্যাপারে সেন্টার ইনচার্জ অনুপকুমার চক্রবর্তীকে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। অনুপবাবু বলেন, ‘‘সেন্টারে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য নিরাপত্তা বাড়ানোর ভাবনা আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন