‘ভাল স্কুলে’ গিয়ে শিখবেন শিক্ষকেরা

এ বারের মাধ্যমিকে জেলায় পাশের গড় ছিল ৮২.৫৮ শতাংশ। সম্প্রতি স্কুল পর্যায়ের মনিটরিং বৈঠকে ঠিক হয়, গড়ের নীচে থাকা স্কুলগুলি খুঁজে বের করে সে দিকে নজর দেবে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০৮:০০
Share:

নতুন কিছু শিখতে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে যেত পড়ুয়ারা। এ বার শিক্ষকেরাও দলবেঁধে যাবেন অন্য স্কুলে। পড়ুয়া, শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলবেন, আদানপ্রদান হবে অভিজ্ঞতা, শিক্ষা পদ্ধতির। এ সপ্তাহে বর্ধমান উত্তর মহকুমা থেকেই শুরু হওয়ার কথা জেলা প্রশাসনের ‘টিচার্স টুইনিং প্রোগ্রামে’র।

Advertisement

প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, “জেলাশাসকের উদ্যোগে এ মাস থেকেই এই প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। এর ফলে তথাকথিত ভাল স্কুলের পড়ুয়ারা কী ভাবে এগোচ্ছে, শিক্ষকরা কী ভাবে তাঁদের সাহায্য করছেন—এই সব নিজেদের চোখে দেখতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।’’ তবে পড়ুয়ারা অন্য স্কুলের পাঠপদ্ধতি দেখতে গিয়ে রাত কাটালেও শিক্ষকেরা দিনের দিনই ফিরে আসবেন।

এ বারের মাধ্যমিকে জেলায় পাশের গড় ছিল ৮২.৫৮ শতাংশ। সম্প্রতি স্কুল পর্যায়ের মনিটরিং বৈঠকে ঠিক হয়, গড়ের নীচে থাকা স্কুলগুলি খুঁজে বের করে সে দিকে নজর দেবে প্রশাসন। মহকুমাশাসক খোঁজ নেবেন ওই স্কুলগুলি গড় মানে পৌঁছতে পারল কি না। স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ৭৮৩টি মাধ্যমিক স্তরের স্কুল রয়েছে। তার মধ্যে ১৯৫টি স্কুলই জেলার গড়ের কাছে পৌঁছতে পারেনি। এর মধ্যে রয়েছে বর্ধমান শহরের মহারাণী অধিরাণী উচ্চ বিদ্যালয় (৮১.২৫%), গুসকরা মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল (৭৯.৪৯%), কৃষ্ণপুর হাইস্কুল (৭৭.১৪%), মেমারির গন্তার বিএম হাইস্কুল (৭৭.০৬%), কাটোয়ার জানকীলাল শিক্ষা সদন (৭৪.০৬%), নিগন উচ্চ বিদ্যালয় (৭২.৭৩%), কেতুগ্রাম এসএএম ইনস্টিটিউশন (৭০.৪১%), সুদপুর উচ্চ বিদ্যালয় (৬৯.৫৮%), পঞ্চাননতলা হাইস্কুল (৬২.৩৪%)।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আপাতত ঠিক হয়েছে, ওই সব স্কুলে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের বিশেষ ক্লাস করানো হবে। প্রতিটি স্কুলকেই বলা হবে, কোন ছাত্র কোন বিষয়ে দুর্বল তার তালিকা করতে। এ জন্য প্রতি পড়ুয়া পিছু ৭৫ টাকা করে বরাদ্দ করবে জেলা প্রশাসন। এর সঙ্গে ওই ক্লাসগুলিতে পড়ুয়ারা যাতে ঠিকমতো আসে তার জন্য ‘ভিডিও কোচিং’, স্কুলগুলি থেকে এক জন করে বেছে নিয়ে এলাকার ৩০-৪০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এলাকারই অন্য ‘ভাল স্কুল’ দেখতে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সেখানকার শিক্ষকরা কী ভাবে পড়াচ্ছেন, পড়ুয়ারা কী ভাবে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর তৈরি করছে—সে সব দেখা হবে। নজর দেওয়া হবে স্কুলের পরিকাঠামো, মিড-ডে মিল কী ভাবে চলছে তাও।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “পড়ুয়ারা অন্য স্কুলে গিয়ে ‘নতুন স্যারে’দের কাছে ক্লাস করে অনেক কিছু শিখছে, পরীক্ষা ভীতি কাটছে। তেমনি শিক্ষকেরাও অন্য স্কুলের পড়ুয়া-শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের স্কুলে কী ঘাটতি রয়েছে তা জানতে পারবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন