মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বর্ধমানের এক মণ্ডপে। ছবি: উদিত সিংহ
শহরের বেশিরভাগ পুজোর উদ্বোধন হয়ে গিয়েছিল চতুর্থীতেই। মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন পঞ্চমীতে। আর ষষ্ঠীর দিন ঢল নামল মণ্ডপের সামনে।
এ চিত্র শুধুমাত্র বর্ধমান শহর নয়। শহর ছাড়িয়ে বড়শুল-মেমারির মণ্ডপগুলিতেও এক দৃশ্য। কাটোয়া-কালনায় বড় পুজোগুলিতেও চোখে পড়ার মতো ভিড়।
ষষ্ঠীর দিন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালনা রোডের সাধনপুর সরকারি আবাসনের পুজো মণ্ডপ এলাকা থেকে পূর্ব বর্ধমানে নানা পুজোকে পুরস্কৃত করার জন্য নাম ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। তালিকায় নাম রয়েছে বড়শুলের জাগরণী, মেমারির সারদাপল্লি-অরবিন্দপল্লি দুর্গোৎসব কমিটি ও কাটোয়ার ন’নগর সবুজ সঙ্ঘের। বর্ধমানের আলমগঞ্জ সর্বজনীন, সবুজ সঙ্ঘ, মেমারির বামুনপাড়া বাজার কমিটি, কালনার মহিষামর্দিনী সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি, কাটোয়ার জাজিগ্রামের নবোদয় সঙ্ঘ ও বর্ধমানের পদ্মশ্রী সঙ্ঘও নানা বিভাগে ঠাঁই পেয়েছে।
সন্ধে গড়াতেই বর্ধমান শহরে পুজো দেখার ভিড় হতে শুরু করে। রাত যত গড়িয়েছে, ভিড়ও বেড়েছে। বর্ধমানের বাসিন্দাদের বড় অংশ ভিড় এড়াতে ষষ্ঠীর রাতে পাড়ি দিয়েছিলেন বড়শুল ও মেমারিতে। বর্ধমানের বাসিন্দা তাহের আলি, চায়না দে-রা বলেন, ‘‘বড়শুল ও মেমারির পুজো মানেই নতুন ভাবনা। সে জন্য আমরা আগেভাগেই মণ্ডপে চলে এসেছি।” মেমারির সারদাপল্লি-অরবিন্দপল্লির থিম ‘সবুজায়ন’। বড়শুলের অন্নদাপল্লির যুবকরা নিজেদের হাতে মণ্ডপ গড়েছেন, যার নাম রেখেছেন ‘ফিরে চল মাটির টানে’।
বর্ধমান শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১২০টি পুজো হয়। এ বছর পুলিশ লাইনের পুজোতেও ভিড় জমেছে। উদ্যোক্তারা ভিড় টানার জন্য কম কসুর করেননি। ‘কন্যাশ্রী’, ‘সেফ লাইফ, সেভ ড্রাইভ’, নাবালিকা বিয়ে রোখা-সহ একাধিক সামাজিক বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
শহরের আলমগঞ্জ এ বার করেছে ‘লক্ষ্য যখন শিকারে’। সবুজ সঙ্ঘের থিম ‘বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি’। কারুশিল্পের প্রদর্শনের মাধ্যমে মণ্ডপ সাজিয়েছে সর্বমিলন সঙ্ঘ। ভিড় সামলাতে প্রায় সাত হাজার সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ ছিল রাস্তায়। বিকেলের পর থেকে শহরের ভিতরে গাড়ি ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা পুলিশ। মোটরবাইকের দাপাদাপি বন্ধে পুলিশ এ বছর বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু ভাবে উৎসব সফল করতে আমরা বদ্ধপরিকর।”