পলি তুলতে মঞ্চ, আপত্তি প্রশাসনের

র পরেই পুলিশ ও সেচ দফতরের কর্তাদের উপস্থিতিতে ওই মঞ্চ খুলে ফেলা হয়।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩১
Share:

চাপানউতোর: খুলে ফেলা হচ্ছে মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র

প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে! এই দাবি করে বৃহস্পতিবার হাওড়ার জয়পুরের একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্গাপুর ব্যারাজে ড্রেজিংয়ের (পলি তোলা) তোড়জোড় করছিল। সে জন্য ব্যারাজের পাড়ে বাঁধা হয়েছিল মঞ্চও। যদিও গোটা বিষয়টি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই পুলিশ ও সেচ দফতরের কর্তাদের উপস্থিতিতে ওই মঞ্চ খুলে ফেলা হয়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে ওই সংস্থাকে মঞ্চ বাঁধতে দেখে ‘ব্যারাজে ড্রেজিং হবে’ এই খবর চাউর হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যে বা যাঁরা এটা করছেন, তা বেআইনি। আমি দফতরের আধিকারিকদের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছি।’’

বেলা বারোটো। মঞ্চ বাঁধার কাজ ততক্ষণে শেষ। আচমকা ঘটনাস্থলে এলেন সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও কর্তারা। তাঁরা এসে জানান, কারও অনুমতি না থাকায় মঞ্চ গোটাতে হবে। একই কথা জানায় দুর্গাপুরের কোকআভেন থানার পুলিশও। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে দু’-এক জন বলার চেষ্টা করেন, তাঁদের কর্তারা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। কিন্তু ততক্ষণে পুলিশের নির্দেশে মঞ্চ খুলে ফেলেন ডেকরেটর কর্মীরা। পড়ে থাকে আনাজ, মাংস।

Advertisement

দুপুর দু’টো নাগাদ ঘটনাস্থলে আসেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তারা। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক সুব্রত রায় দাবি করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই আমরা ব্যারাজ থেকে কী ভাবে পলি তোলা যায়, সে সমীক্ষা করছি।’’ যদিও ওই দাবির স্বপক্ষে সুব্রতবাবু কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে দাবি সেচ দফতরের। এ ভাবে বিনা অনুমতিতে ব্যারাজের পাড়ে মঞ্চ বাঁধায় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করে সেচ দফতর। যদিও সুব্রতবাবু দাবি করেন, ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠান হবে। তার আগে প্রয়োজনীয় অনুমতি তাঁরা নিয়ে নিতেন। শেষমেশ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তাদের থানায় নিয়ে গিয়ে সতর্ক করে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

দুর্গাপুরের ডিভিসি ব্যারাজের জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে পলি তোলা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য কাজিয়া লেগেই আছে। কিছু দিন আগেই ব্যারাজের এক নম্বর লকগেট বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক কাজিয়ায় জড়িয়েছিলেন রাজ্যের রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীববাবু ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এ দিন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে এসেছিলেন বিজেপি-র অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক প্রবীরকুমার সরকার। তিনি অবশ্য দাবি করেন, তাঁকে ওই সংস্থা আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এর থেকে বেশি কিছু জানেন না।

এ সব কিছুর মাঝেসাঝে আক্ষেপ করছেন এক জনই। ডেকরেটর মালিক জীবন আঁকুড়ে। তিনি জানান, ওই সংস্থার সঙ্গে কাজ বাবদ ১৮ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠান ভেস্তে যাওয়ায় মিলল মোটে আট হাজার টাকা। তবে কারও অনুমতি না নিয়ে কী ভাবে ব্যারাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মঞ্চ তৈরি করা হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন