প্রতীকী ছবি।
হুমকি দিয়ে চাষ বন্ধের অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। খণ্ডঘোষের কৈয়ড় গ্রাম পঞ্চায়েতের গুঁইর গ্রামের ওই পরিবারের দাবি, জমিতে কিছুটা ধান রোয়ানোর পরে জোর করে চাষ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিষেধ না মানলে মজুরদের গ্রামছাড়া করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। যদিও তৃণমূলের দাবি, বিষয়টি পারিবারিক ঘটনা।
এর আগেও ভাতারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে চাষ বন্ধ কিংবা প্রাক্তন বাম সাংসদের জমিতে চাষ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত ছিল তৃণমূল। এ বারেও আগের একটি মামলা তোলার জন্য চাপ দিয়ে চাষ বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
গুঁইর গ্রামের ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জগবন্ধু দত্তের অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরে ছ’জনের নেতৃত্বে তাঁর জমিতে চাষ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি ও তাঁর পরিবার আতঙ্কে রয়েছেন। ৮ অগস্ট পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্তেরা আগেও বাড়ি তৈরি করতে বাধা দিয়েছিল তাঁকে। নির্মাণ সামগ্রী লুঠপাটও করেছিল। তখনও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। জগবন্ধুবাবুর দাবি, “ওই অভিযোগ তোলার দাবি জানিয়েই আমার চাষ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” অভিযোগের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী, পূর্ব বর্ধমানেক জেলাশাসক ও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে।
ওই পরিবারের দাবি, তাঁদের ৫ বিঘা জমি রয়েছে। সুষ্ঠু ভাবেই ধান রোয়া চলছিল। আড়াই বিঘা রোয়া হয়েও গিয়েছিল। আচমকা কয়েক দিন আগে খেতমজুররা কাজ করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। জগবন্ধুবাবুর ছেলে উৎপলের দাবি, “তৃণমূলের লোকজন খেতমজুরদের পাড়ায় গিয়ে হুমকি দিয়ে আমাদের জমিতে কাজ করতে যেতে নিষেধ করেছে। ওই নিষেধ অমান্য করে কাজ করতে গেলে গ্রামছাড়া করারও হুমকি দিয়েছে। এরপরে আর কে কাজ করতে আসবে?’’ অভিযোগ, বুধবার রাতে স্থানীয় তৃণমূল দফতরে গিয়ে মীমাংসার কথা বললেও হুমকি শুনতে হয় উৎপলবাবুদের।
যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাজাহান মণ্ডলের দাবি, “নর্দমা পরিষ্কার করতে গেলে পঞ্চায়েতের কর্মীদের বাধা দেন জগবন্ধুবাবু। তিনিই আবার চার জনের নামে অভিযোগ করেছেন। তবে, মীমাংসার মাধ্যমেই চাষের সমস্যা মেটাতে চাইছি।” খণ্ডঘোষের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, “জগবন্ধুবাবুদের সমস্যাটা তো মিটে যাওয়ার কথা। পারিবারিক ঘটনা। কেন মেটেনি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল অভিযোগ পাওয়ার পরেই খণ্ডঘোষের ওসিকে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেন। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবও স্থানীয় বিডিওকে বিষয়টি দেখতে বলেছেন।