প্রতীকী ছবি।
‘গৃহ সম্পর্ক’ অভিযানে গিয়ে শনিবারই তৃণমূলের সঙ্গে ছোটখাট গোলমাল বেধেছিল। কাঞ্চননগরের ওই কর্মসূচির বিষয়টি থানাতেও জানানো হয়েছিল, দাবি বিজেপির। থানা পদক্ষেপ করার ‘আশ্বাস’ও দিয়েছিল। বিজেপির দাবি, রবিবার সেই আশ্বাসে ভর করেই ফের ওই এলাকায় কর্মসূচি করতে যাওয়া হয়। অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন বোমাবাজি, মারধর করে। পুলিশ গিয়ে বিজেপির কয়েকজনকে তুলে নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় তার প্রতিবাদে প্রায় শ’দেড়েক বিজেপি কর্মী-সমর্থক বর্ধমান থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিজেপির অভিযোগ, ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পরে তৃণমূলের নেতৃত্ব স্থানীয় লোকজন এসে বাঁশ, লাঠি নিয়ে জিটি রোডের উপরে, বর্ধমান থানার সামনে হামলা চালায়। ১০-১২ জন আহত হন। গাড়ি, বাইকে ‘ভাঙচুর’ চালানো হয়। যদিও তৃণমূলের দাবি, কোনও হামলা হয়নি। বিজেপির লোকেরা রড, লাঠি নিয়ে মারধর করেছে।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শনিবার কাঞ্চননগরে একটি গোলমাল হয়েছিল। নির্দিষ্ট মামলা করা হয়েছে। রবিবার রাতে আরও একটি গণ্ডগোল হয়েছে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। কেউ আহত হননি।’’
যদিও থানার সামনে কী ভাবে এমন হামলা হল, প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, ‘‘থানার সামনে আক্রমণ করা হল, পুলিশ কী করছিল? তাহলে কি আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছুই নেই! আমরা উচ্চ নেত্বৃতের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি ছাড়া হবে না।’’ দলের সাধারণ সম্পাদক সুনীল গুপ্তেরও দাবি, ‘‘শনিবারই আমাদের লোকজনকে কাঞ্চননগরে মারধর করা হয়েছিল। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তার পরেও থানার সামনেই এই ঘটনা।’’ এ দিন বর্ধমান থানার সামনে দাঁড়িয়ে বিজেপির কয়েকজন মহিলা কর্মীও অভিযোগ করেন, ওই কর্মসূচি করতে যে সব কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়েছিলেন তাঁদের বাড়িতে হামলা, মারধর করা হয়। এলাকার ২২-২৩ জন বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া।
তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক খোকন দাসের দাবি, ‘‘বিজেপি পুরোপুরি মিথ্যা অভিযোগ করছে। মিথ্যার উপরেই দলটা দাঁড়িয়ে আছে। ওরাই আমাদের তিন-চার জন কর্মীকে মারধর করেছে। বাইকে করে লোহার রড, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসেছিল।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘সবাই করোনাভাইরাসের ভয়ে ঘরে ঢুকে রয়েছেন। সেখানে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বিজেপির লোকেরা বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছে। জনসংযোগের নামে হুমকি দিচ্ছে। এর ফলে রোগ সংক্রমণ ছড়ানোরও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তৃণমূলের কর্মীরা উত্তপ্ত হয়ে পড়ছেন। তাঁদের আটকানোর ক্ষমতা আমাদেরও নেই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত লোকজন থানার সামনে জড়ো হয়েছিল। দু’পক্ষকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ সম্পর্কে পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’