ওড়িশায় নিহত বাঙালি শ্রমিকের বাড়িতে সুতির বিধায়ক ইমানী বিশ্বাস। নিহত শ্রমিক জুয়েল শেখ (ইনসেটে)। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলা বলার কারণে বা বাংলাদেশি সন্দেহে নয়, বিড়ি নিয়ে বচসার জন্য পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এমনটাই ব্যাখ্যা দিল ওড়িশার পুলিশ। এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা জুয়েল শেখ ওড়িশার সম্বলপুরে একটি নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের আরও কয়েক জন শ্রমিক ওই কাজ করছিলেন। সম্বলপুরের শান্তিনগর এলাকায় বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই পরিযায়ী শ্রমিকেরা কাজ সেরে ফেরার পথে ছ’জনের একটি দলের সম্মুখীন হন। দল থেকে এক জন তাঁদের কাছে একটি বিড়ি চেয়েছিলেন। তা নিয়েই বচসা শুরু হয়। দু’তরফেই হাতাহাতি হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। সেই সময় জুয়েলকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে সম্বলপুর হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ওড়িশা পুলিশের আইজি (নর্দান রেঞ্জ) হিমাংশুকুমার লাল সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছ’জনকেই গ্রেফতার করেছি। তদন্ত চলছে।’’
বিজেপিশাসিত ওড়িশায় মুর্শিদাবাদের শ্রমিকের এই মৃত্যুকে ঘিরে পথে নেমে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। বৃহস্পতিবারই তারা সমাজমাধ্যমে অভিযোগ করেছে, বাংলা বলার কারণে ওড়িশায় মরতে হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিককে। তৃণমূলের পোস্টে বলা হয়, ‘‘বিজেপির বাংলাবিরোধী প্রচারের প্রত্যক্ষ ফলাফল ওড়িশার এই হত্যা। ভারতের এক জন নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা করা হল কারণ, উন্মত্ত জনতা মনে করেছে বাঙালি মানেই অনুপ্রবেশকারী। অনবরত তাঁদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়ে যেতে হবে।’’ বাংলাভাষী ভারতীয়দের দীর্ঘ দিন ধরেই অনুপ্রবেশকারী হিসাবে প্রচার করে আসছে বিজেপি, দাবি তৃণমূলের।
পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ওড়িশার আইজি হিমাংশু জানান, নিহত যুবক বাঙালি না বাংলাদেশি, তার সঙ্গে হত্যার কোনও সম্পর্ক নেই। বিড়ি নিয়ে ঝামেলার কারণে এই খুন হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।