হাসপাতালে আহত। নিজস্ব চিত্র
ফের দুই গোষ্ঠীর গোলমালে তেতে উঠল গলসি ১ ব্লক। বুধবার উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যেই বেধে গেল মারপিট। এলাকায় বোমাবাজি হয় বলেও অভিযোগ। বিবদমান দু’টি গোষ্ঠীর লোকজন শাসকদলের কর্মী বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। সংঘর্ষে আহত হন পঞ্চায়েতের দুই সদস্য-সহ ৪ জন। তাঁদের মধ্যে রাবু হোসেন খান, শেখ হালিম ও গদাধর ঘোষকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে রাবুকে পাঠানো হয় কলকাতায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের দরপত্র জমা দেওয়া নিয়ে এ দিন দলের ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন ও ব্লক যুব সভাপতি পার্থসারথি মণ্ডলের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পঞ্চায়েত প্রধান মানসা বাউরি বলেন, ‘‘দুপুর ১টা পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল। কিন্তু দুপুর ১২টা নাগাদ দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে।’’ তবে তাঁর দাবি, দরপত্র জমার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মোট ৯ জন দরপত্র জমা দিয়েছেন।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন খাতে প্রায় ৩৬ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা অনুমোদন হয়েছে। সেই কাজের জন্য কয়েক দিন আগে দরপত্র ডাকা হয়েছিল। এ দিন সকাল ১১টা থেকে দু’পক্ষের লোকজন হাজির হয়। যদিও জাকির-গোষ্ঠীর লোকজনের দাবি, তারা পঞ্চায়েতের হলঘর ভাড়া নিয়ে এ দিন দলের সভা করছিল। সেই সময়ে যুব সভাপতির অনুগামী জনা কয়েক পঞ্চায়েত সদস্য হামলা চালায়।
পার্থবাবুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ব্লক সভাপতির অনুগামীকে কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার দাবিতে পরিকল্পতি ভাবে পঞ্চায়েতে প্রায় দেড়শো জন লোক এসে গোলমাল হয়েছে। সদস্যেরা পঞ্চায়েতে পৌঁছতেই তাঁদের উপর হামলা হয়।’’ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ প্রশান্ত লাহার নেতৃত্বে লাঠি ও টাঙ্গি নিয়ে হামলা হয়েছে বলে তাঁর দাবি। এলাকায় বোমাবাজি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
প্রশান্তবাবুর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘কাঁকসা থেকে আদিবাসী শিল্পীরা হেঁটে ব্রিগেড যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করছিলাম। কোনও গোলমালে ছিলাম না। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ জাকিরের অভিযোগ, ‘‘এলাকার উন্নয়ন বন্ধ করতে দরপত্র বাতিল করার জন্য কিছু দুষ্কৃতীকে জড়ো করে দলেরই একাংশ আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে।’’
গলসি ১ বিডিও বিনয়কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘দরপত্রটি পঞ্চায়েতের মাধ্যমে হচ্ছিল। কী ঘটেছে আমার জানা নেই।’’ পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।