সিন্ডিকেটে জড়িত তৃণমূল নেতা ধৃত প্রতারণা মামলায়

তাঁর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন দলেরই বিধায়ক। কিন্তু, সেই অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে আদালতের নির্দেশে লগ্নি সংস্থার নামে এক মহিলার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে দুর্গাপুরের সেই তৃণমূল নেতা খোকন রুইদাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৭
Share:

তাঁর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন দলেরই বিধায়ক। কিন্তু, সেই অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে আদালতের নির্দেশে লগ্নি সংস্থার নামে এক মহিলার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে দুর্গাপুরের সেই তৃণমূল নেতা খোকন রুইদাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

দুর্গাপুরে তৃণমূলের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি খোকনবাবুকে রবিবার দুপুরে তাঁর এলাকা থেকেই ধরে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে শহরের এইচএফসি গেট এলাকার বাসিন্দা জানকী সিংহ সম্প্রতি দুর্গাপুর আদালতে প্রতারণার অভিযোগ করেন। জানকীদেবী জানান, ২০০৭ সালে একটি সিমেন্ট কারখানায় কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর স্বামীর। ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিনি তিন লক্ষ টাকা পান। ২০১০-এর অক্টোবরে খোকনবাবু-সহ চার জন তাঁকে ওই টাকা দুর্গাপুরেরই একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় রাখার পরামর্শ দেন। ওই মহিলার অভিযোগ, প্রথমে রাজি না হলেও পরে চাপের মুখে পাঁচ কিস্তিতে ৩ লক্ষ টাকাই ওই সংস্থায় লগ্নি করেন তিনি। কয়েক মাস সুদও মেলে। মাঝে এক বার প্রয়োজনে ১০ হাজার টাকা ফেরতও পান। কিন্তু, তার পরে আর টাকা মেলেনি। সংস্থার দ্বারস্থ হলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বাকি ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হলেও সেটি বাউন্স করে বলে জানকীদেবীর অভিযোগ। তিনি বলেন, “নিউ টাউনশিপ থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ ঠিক মতো সাহায্য করেনি। তাই কোর্টে খোকনবাবু-সহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি।”

দিন কয়েক আগে দুর্গাপুর (পূর্ব) কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তথা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় দলের উচ্চ নেতৃত্ব এবং আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে চিঠি দিয়ে খোকনবাবুর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ করেছিলেন। বিধায়কের অভিযোগ, সগড়ভাঙায় এডিডিএ-র শিল্পতালুকের নানা কারখানা এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ। খোকনবাবুর ‘তোলাবাজি’তে ওই কারখানা মালিকেরা এবং মুচিপাড়া এলাকার অনেক ব্যবসায়ী জেরবার। কিন্তু তাঁরা ভয়ে কোথাও লিখিত অভিযোগ করতে পারেননি।

Advertisement

সিন্ডিকেট বা তোলাবাজির কথা অবশ্য উড়িয়ে দেন খোকনবাবু। দল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশও নয়। কমিশনারেটের দাবি, কোনও কারখানা খোকনবাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করতে চায়নি। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে, ওই নেতাকে এক বার ডেকে জেরা করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ব্যবস্থা না নিলেও জানকীদেবী আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় এবং আদালত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ নেওয়ায় আর হাত গুটিয়ে থাকতে পারেনি পুলিশ। শুক্রবার খোকনবাবুর খোঁজে এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। সে দিন তিনি পালান। রবিবার অবশ্য ধরা পড়ে যান। বাকি তিন জনেরও খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন