কারখানা নির্মাণের কাজ বন্ধ করল জেলা পুলিশ-প্রশাসন। —নিজস্ব চিত্র।
সরকারি জমি জবরদখল করে সেখানে কারখানা নির্মাণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে। অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল নেতার পুত্রের দিকে। ঘটনা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতে আসরে নামল জেলার পুলিশ-প্রশাসন। শনিবার জেলা প্রশাসনের তরফে ওই কারখানা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ওই সরকারি জমিতে বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়।
আউশগ্রাম বাজারে প্রবেশের কিছুটা আগে গুসকরা ইলামবাজার রাজ্য সড়কের পাশে একটি জমির উপর মাস দুয়েক ধরে একটি কারখানার নির্মাণের কাজ চলছিল। জানা যায়, ওই জমি সরকারি খাসজমি। অভিযোগ, আউশগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ইনদাজুল শেখের পুত্র জিয়াউল শেখ ওরফে সাহেব ওই সরকারি জমি জবরদখল করে কারখানা চালুর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে ওই জমিতে লোহার বিমের কাঠামো এবং টিনের ছাউনি নির্মাণ করা হয়ে গিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, কারখানার জন্য মেশিনপত্রও আসা শুরু হয়।
কোনও রকম অনুমতি ছাড়াই সরকারি জমি কারখানা তৈরির উদ্দেশে ব্যবহার করা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। খবর যায় স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে। জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব) এই ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন। তার পরেই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ওই জমিতে সরকারি ভাবে বোর্ড লাগিয়ে দিয়ে আসা হয়। বোর্ড লাগানোর সময় পুলিশবাহিনীর সঙ্গে ছিলেন আউশগ্রাম ১ নম্বর ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকেরাও। উল্লেখ্য, তাঁদের অভিযোগ পেয়েই ঘটনার এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব) বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তিন সদস্যের কমিটিকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কে বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। ওই জমি সরকারের অধীনে, তা জানিয়ে আমরা সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়ে এসেছি। ওখানে আর কোনওভাবে বেআইনি নির্মাণ করা যাবে না।’’
প্রসঙ্গত, সরকারি জমি জবরদখল করে কারখানা নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে যে জিয়াউল শেখের বিরুদ্ধে, তিনি আগে আউশগ্রাম থানার সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করতেন। তাঁর মা হাসিবা বেগম আউশগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের পদে রয়েছেন। বাবা আউশগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ইনদাজুল শেখ এলাকার ‘প্রভাবশালী নেতা’ বলে পরিচিত। যদিও ইনদাজুলের দাবি, ওই কারখানার সঙ্গে তাঁর ছেলে কোনও ভাবেই জড়িত নয়। কারা এ ব্যাপারে জড়িত সে সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন ইনদাজুল।
শেষমেশ শনিবার জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ওই নির্মীয়মান কারখানার জমিতে সরকারি ভাবে বোর্ড লাগিয়ে দিয়ে হল। সরকারি নির্দেশে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উক্ত জমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীন। যে কোনও ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় পূর্ব বর্ধমানেট আউশগ্রাম ১ নম্বর ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের পক্ষ থেকে আউশগ্রাম থানায় এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে । সরকারি জমি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক।
আউশগ্রামে প্রায় দুই বিঘা সরকারি খাসজমি জবরদখল করে কারখানা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ ওঠার পরেই কড়া পদক্ষেপ নিল