TMC Party Office Vandalized

রাতে তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর, দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন

তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জাগুলিপাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। একটি দলের জেলা যুব নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ তথা জাগুলিপাড়ার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য রহমত মোল্লা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 গলসি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৫৯
Share:

ভাঙা হয়েছে এই কার্যালয়। গলসির জাগুলিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র।

রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের কার্যালয়ে ভাঙচুর করল দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, কার্যালয়ের ছাউনির অ্যাসবেস্টসের চাল, চেয়ার ও শহিদ বেদি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। খুলে ফেলে দেওয়া হয় দলের পতাকা। রবিবার রাতে গলসি ১ ব্লকের জাগুলিপাড়া মোড়ে এই ঘটনার খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। এর পিছনে অবশ্য রাজনীতির যোগ দেখছে না তৃণমূল। তবে বিরোধীদের দাবি, শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জাগুলিপাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। একটি দলের জেলা যুব নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ তথা জাগুলিপাড়ার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য রহমত মোল্লা। অন্যটিতে রয়েছেন ব্লক সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অঞ্চল সভাপতি শেখ আবু বক্করের লোকজন। গত পঞ্চায়েত ভোট থেকেই দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের পরের রাতেই গ্রাম দখলকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বোমাবাজিও হয়। এক তৃণমূল কর্মী আহত হন। তদন্তে নেমে পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করে ৯টি বোমা। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গ্রামের মোড়ে তৃণমূলের কার্যালয়ে ভাঙচুরে নতুন করে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, মাস দুয়েক আগে কার্যালয়টি উদ্বোধন করেছিলেন ব্লক সভাপতি। ইটের দেওয়াল, অ্যাসবেস্টসের ছাউনির এক কামরার এই কার্যলয়ে বসে দলীয় কাজকর্ম করতেন আবু বক্কর ও তাঁর লোকজনেরা। সাম্প্রতিক বোমাবাজির ঘটনায় আবু ও তাঁর বেশ কয়েক জন অনুগামী অভিযুক্ত হয়েছেন। একই ভাবে অভিযুক্ত রহমত ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠও। দু’পক্ষের কয়েক জনকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। কয়েক জন পুলিশের খাতায় পলাতক। সেই থেকে কার্যালয়টিতে তালা ঝুলছে।

Advertisement

আবু বক্কর গোষ্ঠীর লোকজনের দাবি, রাতে কে বা কারা কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। তবে তারা কারা, সে নিয়ে ধন্দ রয়েছে। এলাকায় দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন জনার্দ্দন। তিনি বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ বিষয়টা দেখছে।” ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি তাঁর।

বিজেপির পাল্টা দাবি, তৃণমূল শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। দলের জেলা (বর্ধমান সাংগঠনিক) সহ-সভাপতি রমন শর্মার কথায়, “অস্বস্তি ঢাকার চেষ্টা করছে তৃণমূল। সবাই জানে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই ওই কার্যালয়ে ভাঙচুর হয়েছে। আসলে ওদের দলে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তোলাবাজির লড়াই চলছে।”

সম্প্রতি জেলার নানা এলাকায় পর পর কোন্দলের অভিযোগ উঠছে তৃণমূলে। শুক্রবার রাতে মেমারির বিটরা গ্রামে তৃণমূলের এক পক্ষের মোটরবাইক মিছিলে অন্য পক্ষ হামলা করে বলে অভিযোগ। পরের রাতে আবার গ্রামে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। মাস দেড়েক আগে মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না হালদার টুডু পঞ্চায়েতে সিন্ডিকেট-রাজ নিয়ে সরব হওয়ায় দলের একাংশ হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। মেমারির সাতগেছিয়া ১ পঞ্চায়েতে আবার তৃণমূলের সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতি বাধে। কালনা পুরসভাতেও কিছু দিন ধরে দু’পক্ষের বিবাদ চলছে।

তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘অভিযোগ থাকতেই পারে। তবে তা নেতৃত্বকে জানাতে হবে। তার বাইরে কিছু করা ঠিক নয়। দল নজর রাখছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন