লোটাকম্বল নিয়ে এলাকায় থাকুন, পরামর্শ নেতার

উপনির্বাচনে জয় ধরে রাখতে জনপ্রতিনিধিদের নিজের এলাকায় পড়ে থাকার নির্দেশ দিল তৃণমূল। সঙ্গে এলাকার ও অন্য বিধানসভার নেতাদেরও এলাকা ভাগ করে ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে চার দশক পর মন্তেশ্বর বামেদের হাতছাড়া হয়। ৭১৬ ভোটে জেতেন তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৭
Share:

মন্তেশ্বরে দেওয়ালে লড়াই শুরু। নিজস্ব চিত্র।

উপনির্বাচনে জয় ধরে রাখতে জনপ্রতিনিধিদের নিজের এলাকায় পড়ে থাকার নির্দেশ দিল তৃণমূল। সঙ্গে এলাকার ও অন্য বিধানসভার নেতাদেরও এলাকা ভাগ করে ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

গত বিধানসভা ভোটে চার দশক পর মন্তেশ্বর বামেদের হাতছাড়া হয়। ৭১৬ ভোটে জেতেন তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজা। কিন্তু মাসখানেক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। উপ-নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতে বাবার আসনে টিকিট পান বিধায়কের বড় ছেলে সৈকত পাঁজা। সেই দিন শুরু হয়ে যায় দেওয়াল লিখন।

রবিবার মন্তেশ্বরের ঐক্যতান হলে জেলা পরিষদের সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বৈঠকে ঢোকার আগে প্রত্যেকের সই করে ঢোকা বাধ্যতামূলক করা হয়। এমনকী, বৈঠকে না আসতে পারলে কারণ দর্শানোর কথাও বলা হয়। বৈঠকেই নির্বাচন পদ্ধতি বাতলে দেন দলের সভাপতি স্বপন দেবনাথ। তিনি জানান, জনপ্রতিনিধিদের ভোট মেটা না পর্যন্ত এলাকায় পড়ে থাকতে হবে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর কথাও বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে নিজের স্ত্রীর কথাও বলেন মন্ত্রী। স্বপনবাবু জানান, শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত এলাকার বিদ্যানগর গ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তাঁর স্ত্রী নীলিমা দেবনাথ। বড় ব্যবধানে জয়ের মূল কারণ ছিল মিটিং, মিছিলে জোর না দিয়ে নীলিমাদেবী পৌঁছে গিয়েছিলেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। বাজারে, পুকুরঘাটে, বাড়িতে বারবার যাওয়ায় এলাকার মানুষ বলতে বাধ্য হয়েছিলেন ‘বৌমা বারবার ভোট চাইতে আসতে হবে না। ভোটটা তোমাকেই দেব।’

Advertisement

বৈঠকে সিঙ্গুরে জয়-সহ সরকারি নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা তুলে ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সঙ্গে দলবিরোধী কাজ করলে শাস্তির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

এ দিনের বৈঠকে বিধানসভা এলাকার বাইরে থেকেও নেতাদের দায়িত্ব দেয় দল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের উপর বাঘাসন, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর উপর ভাগরামূল পঞ্চায়েত এলাকার দায়িত্ব বর্তেছে। মন্ত্রীর কাঁধে রয়েছে মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত এলাকার দায়িত্ব। পূর্বস্থলী ২ লাগোয়া পঞ্চায়েতগুলিকে পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, কালনা ১ ব্লক লাগোয়া পঞ্চায়েতগুলিকে দলীয় নেতা ইনসান মল্লিক এবং সুকুর শেখের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘নবীন বাগ, নিশীথ মালিক, অলোক মাঝির মতো গ্রামীণ এলাকার বিধায়কদের বলা হয়েছে ভোট পর্যন্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ না দিতে। তাদের লোটা কম্বল নিয়ে মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় থাকার কথা বলা হয়েছে। আমি নিজেও মন্তেশ্বরে থাকছি।’’

যদিও সিপিএমের দাবি, এই উপনির্বাচনে সাধারন মানুষ তাদের সঙ্গেই রয়েছেন। দলের মেমারি ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক অশেষ কোনার বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। ঠিকঠাক ভোট হলে এই উপনির্বাচনে দলের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন