প্রতীকী ছবি
সম্প্রতি লাউদোহা (ফরিদপুর) থানার পানশিউলিতে দলীয় নেতাকে মারধরের অভিযোগ করেছিল বিজেপি। তাঁকে দেখতে গিয়ে গ্রামে ঢুকতে বাধা এবং থানা থেকে বেরনোর পরে, দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের উপরেও তৃণমূল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করে। কিন্তু কেন এই হামলা, তা নিয়ে বিজেপির দাবি, এলাকায় জমি হারাচ্ছে বুঝতে পেরেই ‘রুষ্ট’ তৃণমূল। যদিও রাজ্যের শাসক দল এই দাবি মানতে চায়নি।
লক্ষ্মণবাবু এই সমস্ত ঘটনার জন্য সরাসরি পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির দিকেই আঙুল তোলেন। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন তিনি লক্ষ্মণবাবু। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে ৬৮,৬০০টি ভোট (৪৬ শতাংশ) পেয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। বিজেপি সে বার পেয়েছিল ১৩,৬০৪টি (৯ শতাংশ) ভোট। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে আসানসোল আসনে অন্য ছ’টি বিধানসভা এলাকার সঙ্গে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভাতেও এগিয়ে যায় বিজেপি। তারা পেয়েছিল ৭০,২৯৬টি (৪৪.৭৫ শতাংশ) ভোট। তৃণমূলের এই বিধানসভা এলাকায় ভোট কমে হয় ৬৪,২৭৫টি (৪০.৯১ শতাংশ)।
এই ভোট-অঙ্ককে সামনে রেখেই লক্ষ্মণবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা এলাকায় দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করেও জায়গা ধরে রাখতে পারেননি সেখানকার বিধায়ক, তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সেই রাগ থেকেই এই হামলা। ব্লক তৃণমূল নেতা সুজিত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হামলা হয়েছিল।’’ সুজিতবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘এলাকায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছিল বিজেপি। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবাদ করেছিলেন।’’ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন জিতেন্দ্রবাবুও। ‘দুষ্কৃতীদের’ সঙ্গে তাঁদের দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি বিধায়কের।
পাশাপাশি, তৃণমূল নেতৃত্ব লোকসভা ভোটের ফলকে আমল দিতে রাজি নন। তাঁদের ব্যাখ্যা, লোকসভায় সিপিএম-এর ভোট গিয়েছে বিজেপিতে। ২০১৬-র বিধানসভায় পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা আসনে সিপিএম পেয়েছিল ৬৩,১২০টি ভোট (৪২ শতাংশ)। ২০১৯-এর লোকসভায় তা কমে দাঁড়ায় ১১,৫৮৩টি ভোটে (৭.৩৭ শতাংশ)। যদিও লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘শুধু বিরোধীরা নন, রাজ্যের শাসক দলের অনেকেও আমাদের ভোট দিয়েছিলেন। পাণ্ডবেশ্বরেই বিধানসভার তুলনায় লোকসভায় তৃণমূলের ভোট কমেছে প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশের বেশি। ফলে, তৃণমূলের এই অঙ্ক খাটছে না।’’ পক্ষান্তরে, তৃণমূল নেতা জিতেন্দ্রবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিধানসভা ভোটের প্রেক্ষিত সম্পূর্ণ আলাদা। আগামীর ভোটেও মানুষ আমাদের পাশেই থাকবেন।’’