হেনস্থা অটো চালকদের, নালিশ টোটো সংগঠনের

অটো চালকদের একাংশের দৌরাত্ম্যে তারা নাজেহাল, এই অভিযোগ তুলে সোমবার দুর্গাপুর পুরসভায় স্মারকলিপি দিলেন টোটো চালকেরা। অটো চালকেরা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে টোটো চলাচলের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। পুরসভার তরফে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বছর দেড়েক আগে দুর্গাপুর শহরে চালু হয় ই-রিকশা তথা টোটো। ঝকঝকে, আরামদায়ক, সাধারণ রিকশার তুলনায় গতিশীল ও দূষণহীন এই যান কিছু দিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে শিল্পশহরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৩২
Share:

দুর্গাপুরের রাস্তায় টোটো। —নিজস্ব চিত্র।

অটো চালকদের একাংশের দৌরাত্ম্যে তারা নাজেহাল, এই অভিযোগ তুলে সোমবার দুর্গাপুর পুরসভায় স্মারকলিপি দিলেন টোটো চালকেরা। অটো চালকেরা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে টোটো চলাচলের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। পুরসভার তরফে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বছর দেড়েক আগে দুর্গাপুর শহরে চালু হয় ই-রিকশা তথা টোটো। ঝকঝকে, আরামদায়ক, সাধারণ রিকশার তুলনায় গতিশীল ও দূষণহীন এই যান কিছু দিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে শিল্পশহরে। এই রিকশা চালানো লাভজনক বলে মনে করেন চালকেরাও। কারণ, ব্যাটারি চার্জ দিতে গড়ে ৩০ টাকা খরচ হয়। এক বার চার্জ দিলে দৌড়য় প্রায় ৭৫-৮০ কিলোমিটার।

টোটো চালু হওয়ার পরে তা ভাগ বসায় আর এক দূষণহীন যান সিএনজি চালিত অটোর ব্যবসায়। অটো লম্বা রুটে চলে। রিজার্ভ করলে চড়া ভাড়া গুণতে হয়। এ ছাড়া দুর্গাপুরের অসমান ভূমিরূপের জন্য সাধারণ রিকশায় চড়ে যাতায়াত করা বেশ অস্বস্তিকর। তাই স্বল্পদূরত্বে যাতায়াতের জন্য টোটোই বেশি কার্যকর বলে শহরবাসী মনে করেন। টোটো চালকদের অভিযোগ, এ সব দেখে খেপে ওঠেন অটো চালকদের একাংশ। নানা অছিলায় তাঁরা টোটো চলাচলে সমস্যা তৈরি করছেন। এমনকী, তাঁদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগও তুলেছেন অটো চালকদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

টোটো চালকদের পক্ষে সুনীল রায় বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনে পুরসভার অনুমতি নিয়ে চালাই আমরা। অথচ, রাস্তায় অটো চালকদের একাংশের সঙ্গে আমাদের বচসা ও অশান্তি লেগেই থাকে।’’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, দু’একটি মিনিবাসের চালক ও কর্মীরাও টোটো চলাচলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। টোটো চালক সঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘অটো বা মিনিবাসের মতো আমাদের কোনও নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই। রাস্তার ধারে যেখানে-সেখানে দাঁড়াতে হয়। অনেক যাত্রীই জানতে পারেন না কোথায় রিকশা পাওয়া যাবে।’’ তিনি জানান, কোনও রকম বচসা বা অশান্তি না করে নিয়ম মেনে তাঁরা রিকশা চালাতে চান শহরে।

সোমবার শহরের টোটো চালকদের সংগঠন ‘দুর্গাপুর ই-রিকশা ইউনিয়ন’-এর তরফে পুরসভায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। লিখিত ভাবে দাবি জমা দেওয়া হয় মহকুমাশাসকের অফিসেও। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা এখনও পর্যন্ত শহরে এখন ২৪টি টোটো চলাচলের অনুমোদন দিয়েছে। আরও প্রায় ১৫টি টোটো অনুমোদন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছে। এ দিন স্মারকলিপিতে অবিলম্বে টোটোর জন্য নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড এবং রাস্তায় অটো বা মিনিবাস চালকদের সঙ্গে যাতে কোনও রকম অশান্তিতে জড়াতে না হয় তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।

অটো চালকদের সংগঠন ‘দুর্গাপুর সিএনজি অপারেটর্স ইউনিয়ন’-এর সহ-সভাপতি শান্তনু সোম দাবি করেন, ‘‘নতুন পরিবহণ আইনে ই-রিকশা চলাচলের জন্য পরিবহণ দফতরের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। পুরসভার অনুমতি নিয়ে এই রিকশা আর চালানো যাবে না।’’ তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমানে শহরে যতগুলি ই-রিকশা চলছে সবই অবৈধ। তিনি বলেন, ‘‘অটোগুলি বৈধ অনুমতি নিয়ে চলছে। সেখানে অবৈধ ভাবে কেউ অটোর যাত্রী ছিনিয়ে নিলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতেই পারে। আমরা চাই নিয়মের মধ্যে থেকে সবাই পরিষেবা দিন।’’ আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন