ভোগান্তি দুই জেলায়

গুসকরায় অবরোধ, থমকে ট্রেন

রেল সূত্রে জানা যায়, বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের গুসকরা স্টেশনে ছ’টা ৫০ মিনিটে ঢোকার কথা। কিন্তু, এ দিন ঘণ্টাখানেক পেরিয়ে গেলেও ওই ট্রেন স্টেশনে না আসায় নিত্যযাত্রীদের ক্ষোভ বাড়তে থাকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০২
Share:

ঝুঁকি: ট্রেন দুর্ভোগে দিনভর এ ভাবেই বাদুড়ঝোলা যাত্রীরা। গুসকরায় বুধবার। নিজস্ব চিত্র

কেউ যাচ্ছিলেন পরীক্ষা দিতে। কারও ছিল ইন্টারভিউ। আচমকা বিপত্তি। ট্রেন আটকে স্টেশনে স্টেশনে। কারণ বুধবার সকালে গুসকরা স্টেশনে ফের রেল অবরোধ করেছেন নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, ফি দিনই বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার দেরিতে আসে। এর জেরে গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয় তাঁদের।

Advertisement

রেল সূত্রে জানা যায়, বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের গুসকরা স্টেশনে ছ’টা ৫০ মিনিটে ঢোকার কথা। কিন্তু, এ দিন ঘণ্টাখানেক পেরিয়ে গেলেও ওই ট্রেন স্টেশনে না আসায় নিত্যযাত্রীদের ক্ষোভ বাড়তে থাকে। শেষে সকাল ৮টা ১৪ মিনিটে ট্রেনটি গুসকরা স্টেশনে ঢোকার মুখে যাত্রীরা অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী। কিন্তু কেন এই অবরোধ? নিত্যযাত্রী সৌগত গুপ্ত, স্বাধীন মণ্ডল, রথীন ঘোষদের অভিযোগ, ‘‘ছ’মাস ধরে এই ট্রেন লেট করে চলছে। রেল সব জেনেও কিছু করে না। আমাদের দাবি, বিশ্বভারতীর আগে একটা লোকাল ট্রেন দেওয়া হোক।’’

নিত্যযাত্রীরা জানান, বিশ্বভারতীতে ফাস্ট প্যাসেঞ্চারে চড়ে বহু যাত্রী খানা জংশন থেকে ‘কানেকটিং ট্রেন’ ধরে ব্যবসা-সহ নানা প্রয়োজনে আসানসোল, দুর্গাপুরে যান। কিন্তু বিশ্বভারতী দেরি করার ফলে তাঁদের ট্রেন ধরতে অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অনেকে আবার বর্ধমান থেকে ট্রেন ধরে হাওড়া যান। তাঁরাও নির্দিষ্ট ট্রেন ধরতে পারছেন না বলে অভিযোগ। বর্ধমান-বীরভূম নিত্যযাত্রী সংগঠনের সম্পাদক অশোক চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘এটা আসলে দীর্ঘ দিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।’’

Advertisement

টানা প্রায় দু’ঘণ্টার বিক্ষোভে গুসকরা তো বটেই বোলপুর, ভেদিয়া স্টেশনেও বেশ কিছু ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। রেল সূত্রে জানা যায়, গুসকরায় গণদেবতা, বোলপুরে পদাতিক, ভেদিয়ায় কাঞ্চনকন্যা-সহ বেশ কয়েকটি ট্রেন আটকে পড়ে।

এই অবরোধের জেরে বেশ কয়েকটি স্টেশন এবং এলাকায় ভোগান্তির মুখে পড়েন অনেকেই। বুধবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কলেজের পরীক্ষা ছিল। ফলে পরীক্ষার্থীরা ভোগান্তির মুখে পড়েন। উত্তরবঙ্গ থেকে আসছিলেন জুঁই আলি, রেজিনা বেগম প্রমুখ। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা জলপাইগুড়ি থেকে রাজারহাট যাচ্ছি, ইন্টারভিউ দিতে। কী ভাবে ঠিক সময়ে পৌঁছব, জানি না।’’ রেলগেট আটকে থাকার কারণে বাস চলাচলেও প্রভাব পড়ে। ব্যাপক যানজট তৈরি হয় গুসকরায়। গুসকরা থেকে বেনাচিতি যাচ্ছিলেন হরিচরণ মজুমদার। বাস আটকে যাওয়ায় তিনি ফিরে যান। সমস্যায় পড়েন বোলপুর-সহ বীরভূমের বেশ কিছু এলাকার যাত্রীরাও। মল্লারপুরের রোজিনা বিবির বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা চলছে। তিনি বলেন, ‘‘ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলাম। কখন পৌঁছব কে জানে।’’ বোলপুরের কলেজ পড়ুয়া বাপ্পাদিত্য বিষ্ণুও জানান, টিউশন পড়তে যাচ্ছিলেন। অযথা দেরি হল।

যদিও রেল অবরোধের ঘটনা নতুন নয় গুসকরায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট মাস আগে বিশ্বভারতীর দেরিতে চলাকে কেন্দ্র করেই গুসকরা স্টেশনে অবরোধ করা হয়। সেই সময়ে এক দল যাত্রীর বিরুদ্ধে স্টেশন মাস্টারের অফিস ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে।

গুসকরার স্টেশন ম্যানেজার উত্তম দে অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘চেষ্টা করা হবে নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন চালানোর। এ দিন কুয়াশার কারণে ট্রেন চলাচলে সমস্যা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন