ঝুঁকি নিয়েই বাসের ছাদে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।
বাসের ছাদে বসলে ভাড়া কম লাগে! তাই প্রৌঢ় চেপেছিলেন বাসের মাথায়। আচমকা বিপত্তি। মাথার উপরে বিদ্যুতের তারে ধাক্কা লেগে সটান রাস্তায় পড়ে গেলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে বাসের ছাদে যাতায়াত করতে গিয়ে এ ভাবেই ফের দুর্ঘটনা ঘটল কাটোয়ায়।
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে বর্ধমান থেকে বাসের ছাদে চেপে কাটোয়া আসছিলেন চকসূজাপুরের বাসিন্দা, পেশায় হকার তপন থান্দার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছোটলাইপাড় নামার জন্য বাসের ছাদে দাঁড়িয়ে পড়েন বছর চল্লিশের তপনবাবু। কালীতলা মিলপাড়ার কাছে বিদ্যুতের তারে আচমকা ধাক্কা লেগে ছাদ থেকে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান বাসের কর্মীরা।
পুলিশ প্রশাসন জানায়, বেশ কিছু ব্যবস্থা সত্ত্বেও বাসের ছাদে ঝুঁকির যাত্রায় লাগাম টানা যাচ্ছে না। এ দিন বেশ কয়েক জন নিত্যযাত্রী আবার যুক্তি দেন, ‘‘বাসে খুব ভিড়। তাই হাওয়া খেতে খেতে ভাল ভাবে যাওয়ার জন্য ছাদে উঠি!’’ নির্মল ঘোষ, সজল বারুইদের মতো কয়েক জন নিত্যযাত্রীর আবার দাবি, ‘‘বাসের ভিতরে বসলে বর্ধমান যেতে গেলে ভাড়া ৩৫ টাকা। সেখানে ছাদে বসলে ভাড়া ১৫ টাকা।’’ এ ছাড়া বাসের ছাদে পণ্য পরিবহণের ছবিও প্রায়শই দেখা যায়।
কিন্তু এমন যাতায়াতের ফলে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। মাস খানেক আগে বীরভূমে বা গলসি চৌমাথায় দুর্ঘটনায় প্রাণও গিয়েছে কয়েক জন যাত্রীর। যদিও বাসে অভিযান চালানো, জরিমানা আদায়-সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে প্রশাসনের দাবি। সম্প্রতি বাসের ছাদে যাত্রীদের চাপতে দেখে ধরপাকড়ও করে পুলিশ। বাসের ছাদে যাতায়াত বন্ধে যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা প্রচার চালান এসডিপিও সায়ক দাস। ছাদে ওঠা বন্ধে নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়। কিন্তু প্রশাসনের আক্ষেপ, এর পরেও হুঁশ ফেরেনি যাত্রী বা বাসকর্মীদের।
বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নারায়ণচন্দ্র সেনের অবশ্য আক্ষেপ, ‘‘নিষেধ সত্ত্বেও বারণ শোনেন না কেউ।’’ ট্রাফিকের আধিকারিক সংগ্রাম মোহিতে বলেন, ‘‘বর্ধমান থেকে কাটোয়ার দিকে আসা বাসগুলিতে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। জরিমানা করা হচ্ছে।’’