জয়ীদের জীবনপঞ্জি নিচ্ছে দল

তৃণমূলের দাবি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ভোটের আগেই দলীয় নেতৃত্ব তথ্য সংগ্রহের কাজে নেমে পড়েছিলেন। ওই দুই জেলায় দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নিদান ছিল, জয়ের ব্যবধান বিচার করে প্রধান বা কর্মাধ্যক্ষের পদ মিলতে পারে। তেমনই ফল খারাপ হলে জুটবে তিরস্কার।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৮ ০০:৫২
Share:

বিলি হচ্ছে এই ফর্ম। নিজস্ব চিত্র

সারা রাজ্যে পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে জয়ী প্রার্থীদের জীবনপঞ্জি নিয়ে ‘তথ্য-ব্যাঙ্ক’ গড়তে চলেছে তৃণমূল।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রতিটি জেলার সভাপতির কাছে জীবনপঞ্জির ‘ফর্ম্যাট’ পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই অনুযায়ী গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের জয়ী সদস্যদের সংখ্যা ধরে জীবনপঞ্জি ছাপিয়ে ব্লকের সভাপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা সভাপতিদের। ১৫ জুনের মধ্যে ওই সব জীবনপঞ্জি কলকাতার তৃণমূল ভবনে পৌঁছনোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

হঠাৎ এ রকম সিদ্ধান্ত কেন?

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির স্তরে কর্মকর্তাদের বাছাই করেন সাধারণত দলের জেলা নেতৃত্বই। অনেক সময় দেখা যায়, যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কোনও জয়ী প্রার্থী জেলার কোনও নেতার ‘কাছের লোক’ হওয়ার সুবাদে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মকর্তা হয়ে গিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে ওই পঞ্চায়েত নিয়ে স্থানীয় মানুষজন কিংবা দলের কর্মীদের একাংশ বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন—এমন রিপোর্টও পেয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্য তৃণমূলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার কথায়, “জীবনপঞ্জি হাতে থাকলে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মকর্তা বাছতে দলের সুবিধা হবে। পাশাপাশি দল এক ব্যক্তি এক পদের সিদ্ধান্তও নিয়েছে। সেটাও আমাদের নজরে থাকবে।’’

ওই নেতা জানিয়েছেন, জীবনপঞ্জি হাতে নিয়ে দলের তরফে জেলার পর্যবেক্ষকেরা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান বাছবেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতিও রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবেন। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্রেফ জেলা পরিষদের কর্মকর্তা নির্বাচিত করেছিলেন রাজ্য নেতৃত্ব।

তৃণমূলের দাবি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ভোটের আগেই দলীয় নেতৃত্ব তথ্য সংগ্রহের কাজে নেমে পড়েছিলেন। ওই দুই জেলায় দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নিদান ছিল, জয়ের ব্যবধান বিচার করে প্রধান বা কর্মাধ্যক্ষের পদ মিলতে পারে। তেমনই ফল খারাপ হলে জুটবে তিরস্কার। মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের কালীবাজারে, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের দফতর থেকে বিভিন্ন ব্লকের সভাপতিদের হাতে জীবনপঞ্জির ফর্ম তুলে দেওয়া হয়। জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, “রাজ্যের নির্দেশে ওই ফর্ম ব্লক সভাপতিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের তথ্য থাকা ভালই তো।’’

পশ্চিম বর্ধমানে জেলা স্তরে ফর্ম পৌঁছেছে। তবে এখনও বিলি করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। বীরভূমের সিউড়ি ২ ব্লকের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘জয়ী প্রার্থীদের জীবনপঞ্জি নেওয়ার বিষয়ে নেতৃত্বের নির্দেশ এসেছে। শীঘ্রই সেই মতো কাজ শুরু হবে।’’ জীবনপঞ্জির ফর্ম এখনও যায়নি বাঁকুড়ায়। জেলা তৃণমূলের এক নেতা জানান, ওই ‘ফরম্যাট’ পেলেই দ্রুত ছাপিয়ে ব্লক সভাপতিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন