রাস্তায় কাজ, দামি ত্রিফলা নষ্ট মাঠেই

বছর কয়েক আগে বর্ধমান শহরের জিটি রোডের দু’ধারে বসানো হয়েছিল ত্রিফলা। ধাপে ধাপে বেড়েছে ত্রিফলার সংখ্যা। আলো-আঁধারিতেই ত্রিফলার রাত কাটছিল। কিন্তু মাস দেড়েক আগে ত্রিফলার উপরে পড়ল কোপ। রাস্তা থেকে উপড়ে ফেলা ত্রিফলাগুলির ঠাঁই হয়েছে পুরসভার লাকুর্ডির জলকলের মাঠে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০২:৫৫
Share:

লাকুর্ডি মাঠে ত্রিফলা। —নিজস্ব চিত্র।

কোটি টাকার ত্রিফলা গড়াগড়ি খাচ্ছে মাঠে!

Advertisement

বছর কয়েক আগে বর্ধমান শহরের জিটি রোডের দু’ধারে বসানো হয়েছিল ত্রিফলা। ধাপে ধাপে বেড়েছে ত্রিফলার সংখ্যা। আলো-আঁধারিতেই ত্রিফলার রাত কাটছিল। কিন্তু মাস দেড়েক আগে ত্রিফলার উপরে পড়ল কোপ। রাস্তা থেকে উপড়ে ফেলা ত্রিফলাগুলির ঠাঁই হয়েছে পুরসভার লাকুর্ডির জলকলের মাঠে। সেখানেই রোদ-বৃষ্টিতে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের দিন কাটছে।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, শহরের উল্লাস মোড় থেকে বীরহাটা সেতু ও স্টেশনের কাছ থেকে নবাবহাট পর্যন্ত বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা (বিডিএ) ও পুরসভা দফায় দফায় মোট ৫২৫টি ত্রিফলা বসিয়েছিল। তার মধ্যে উল্লাস মোড়ের দিকে ৩৮০টি ও নবাবহাট মোড়ের দিকে ১৪৫টি ত্রিফলা বসিয়ে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছিল। পুরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ত্রিফলার দাম গড়ে ২৪ হাজার টাকা। সেই হিসেবে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকার ত্রিফলা বর্তমানে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। পুরসভার কাউন্সিল পরিষদ সদস্য (আলো) জনাব সাহাবুদ্দিন খানও বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “কোটি টাকার উপরে ত্রিফলা পড়ে রয়েছে। জিটি রোডের সংস্কারের জন্য ৫২৫টি ত্রিফলা তুলে ওই মাঠে রাখতে হয়েছে।”

Advertisement

মঙ্গলবার লাকুর্ডি জলকলের মাঠে গিয়ে দেখা গেল, ডাঁই হয়ে পড়ে থাকা ত্রিফলার বাতিস্তম্ভে রোদে-জলে মরচে পড়েছে। তবে বাতি ও ‘ব্রাকেট’ একটি ঘরে রাখা হয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু ব্রাকেটেরও অবস্থা খারাপ বলে জানা গেল। কিন্তু ত্রিফলার এমন ‘উচ্ছেদ’-র কারণ? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের রাস্তা সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের জন্য রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতর ১০০ কোটি টাকা খরচ করছে। তারাই শহরের দু’প্রান্তে গেট, আলো, নিকাশি, বাগান তৈরি করে সৌন্দর্যায়ন করবে। সে জন্যই প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশে ত্রিফলাগুলি তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে পুরসভা।

বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলগুলির কটাক্ষ, “ওই আলো কি কোনও কাজে লাগত। বেশির ভাগ দিনই তো আঁধারে ডুবে থাকত ত্রিফলা। সৌন্দর্যায়নের নামে জনগনের টাকা অপচয় করা হয়েছিল। এ বার মাঠে পড়ে নষ্ট হবে বাতিস্তম্ভগুলি।’’

যদিও বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের দাবি, “ত্রিফলাগুলি যত্ন করে রাখা রয়েছে। প্রথমে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ত্রিফলা দিয়ে সাজানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বিদ্যুৎ বিলের কারণে সেই প্রস্তাব নাকচ হয়েছে। এখন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ত্রিফলাগুলি ভাগ করে দেওয়া হবে।” তবে কবে থেকে সেই কাজ শুরু হবে, তার সদুত্তর দিতে পারেননি পুরসভার কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement