দিনভর এ ভাবেই পোড়ানো হচ্ছে কয়লা। নিজস্ব চিত্র
তিন গ্রামে তেমন কোনও বড় শিল্প নেই। দু’টি কোলিয়ারি রয়েছে, তা-ও বেশ খানিকটা দূরে। কিন্তু তার পরেও আসানসোলের বেজডিহি, মিঠানি, আলডি, এই তিনটি গ্রামের আকাশ সর্বক্ষণ ঢেকে থাকছে কালো ধোঁয়ায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাঁচা কয়লা পোড়ানোর জন্যই এই হাল।
আসানসোল পুরসভার ৫৮, ৭৩, ৭৪, এই তিনটি ওয়ার্ড লাগোয়া খরমবাঁধ অঞ্চল। বার্নপুরের নিউটাউন লাগোয়া আট নম্বর বস্তির সামনের রাস্তা ধরে মিঠানি গ্রামের দিকে বেশ কিছুটা এগোলেই খরমবাঁধের দেখা মেলে। এই অঞ্চলটি মিঠানি, বেজডিহি ও আলডির বাসিন্দাদের কাছে ক্রমশ আতঙ্ক হয়ে উঠেছে বলে জানা গিয়েছে। খরমবাঁধে রাস্তার দু’প্রান্তের কয়েক বিঘা ফাঁকা জমিতে সার সার কয়লার স্তূপে আগুন জ্বলছে। গলগল করে বেরোচ্ছে কালো ধোঁয়া। তা ছড়িয়ে পড়েছে লাগোয়া ওই গ্রামগুলিতে।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে জানান বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রসেনজিৎ বাউড়ি বলেন, ‘‘খুবই কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও প্রবীণদের সমস্যা সব কে বেশি।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে বারবার আসানসোল পুরসভার কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি।
কিন্তু এ ভাবে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে কয়লা পোড়ানো হচ্ছে কেন? মহেন্দ্র পাসোয়ান নামে এক জন জানান, এই কয়লার পুরোটাই আসে অবৈধ খাদানগুলি থেকে। সেগুলি পুড়িয়ে গৃহস্থের কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়। পরে তা বস্তায় বোঝাই করে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করা হয়। এলাকায় গিয়ে জানা গেল, খরমবাঁধ এলাকায় বসবাসকারী শতাধিক বাসিন্দার রুটি-রুজি নির্ভর করছে এই
‘পেশা’র উপরে।
যদিও পুরসভার ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উত্তম বাউড়ি বলেন, ‘‘পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হবে।’’ সমস্যা সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করেন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নেপাল চৌধুরীও। অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখার আধিকারিকেরা।