দোমড়ানো: পানাগড়ে সোমবার সকালে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস। নিজস্ব চিত্র
পাথরবোঝাই লরি উল্টে জখম হলেন চালক। সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কে কাঁকসার বেলডাঙার কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। জখম চালককে ভর্তি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধে করেন। যান চলাচল ব্যাহত হয়।
বীরভূমের ইলামবাজারের দিক থেকে লরিটি পানাগড়ের দিকে আসছিল। লরির চালক মীর চাঁদ অভিযোগ করেন, সামনে একটি ডাম্পারকে তাড়া করছিল পুলিশের গাড়ি। হঠাৎ মাঝরাস্তায় দু’টি গাড়িই দাঁড়িয়ে পড়ে। তখন পুলিশের গাড়িটির সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি। উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরিকে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় তাঁর লরিটি। চাপা পড়ে যান তিনি ও খালাসি। খালাসিকে সহজেই বের করা গেলেও চালকের দেহের অনেকটা অংশ পাথরে ঢেকে যাওয়ায় তাঁকে বের করতে বেগ পেতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের তাড়া খেয়ে এ ভাবে মাঝে-মাঝেই এই এলাকায় অনেক গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। পুলিশকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ তুলে এক দল বাসিন্দা পথ অবরোধ করেন। সন্দীপ হালদার, মিঠুন মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘এই রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় দিনরাত তল্লাশির নামে তোলা আদায় করেন কিছু পুলিশকর্মী। ফলে, দুর্ঘটনা ঘটছে বারবার।’’ ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত বছর অক্টোবরে রাস্তায় গাড়ি রেখে পুলিশ টাকা আদায় করার সময়ে একটি গাড়ি ডান দিক দিয়ে যেতে গেলে এক ব্যক্তিকে ধাক্কা দেয়। ওই বছরের মার্চে একই ভাবে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে একটি লরি চাপা দেয় তিন মোটরবাইক আরোহীকে। গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় দানবাবার মাজারের কাছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারানো লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় দুই ভাইয়ের। দুর্ঘটনার পরেই জনতা পুলিশের গাড়িতে ইট-পাটকেল ছোড়ে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, পুলিশ ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ না করে গাড়ি আটকে তোলা আদায়ে ব্যস্ত থাকে। লরিটি পালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়।
দুর্ঘটনা রুখতে সড়কে পরিদর্শন হয়েছে। বিশেষ দল তৈরি করেছে প্রশাসন। তার পরেও পরিস্থিতি যে বিশেষ বদলায়নি, সোমবারের ঘটনায় ফের তা প্রমাণ হল বলে দাবি এলাকাবাসীর। পুলিশ অবশ্য তোলা আদায়ের অভিযোগ মানতে চায়নি।