‘চিকু’র কারবার চলছে বাজারে

এই ‘বিক্রি’ স্বাভাবিক ভাবেই আড়ালে-আবডালে চলে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাতার শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share:

উদ্ধার হয় এই কচ্ছপ। নিজস্ব চিত্র

সম্প্রতি ভাতারের বলগোনা বাজার থেকে ১০টি কচ্ছপ উদ্ধার করেছিল ভাতার থানার পুলিশ। ওই ঘটনার পরে ভাতার, আউশগ্রাম ও মঙ্গলকোটের বিভিন্ন বাজার সূত্রে জানা গেল, কচ্ছপ বিক্রি চলছে আকছার। তা বিক্রি হয়, রুই, কাতলা, মৃগেল-সহ নানা ধরনের মাছের সঙ্গেই। তবে এই ‘বিক্রি’ স্বাভাবিক ভাবেই আড়ালে-আবডালে চলে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

কী ভাবে চলে বিকিকিনি? সম্প্রতি এক এলাকার বাজারে গিয়ে দেখা গেল, এক ‘খুচরো’ বিক্রেতার দোকানের সামনে বেশ ভিড়। তার মধ্যেই দু-এক জন নিচু স্বরে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘চিকু হবে?’ বিক্রেতা চোখের ইশারায় পিছনে থাকা গামলার দিকে ইঙ্গিত করলেন। গামলা ঝুড়ি দিয়ে চাপা। ঝুড়ির উপরে আবার নীল রঙের পলিথিন। সেখানেই রাখা ‘চিকু’র (এই ধরনের কচ্ছপকে ওই নামেই ডাকেন স্থানীয়েরা) দল। দরদাম সব পুষিয়ে গেলেই চিকু কেটে, সাফ করে ‘পাচার’ হয় ক্রেতার ব্যাগে।

বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার (গুসকরা) সুভাষচন্দ্র পাল জানান, এই ‘চিকু’ আসলে আসলে ‘ইন্ডিয়ান সফ্‌ট-শেলড টার্টল’ (‘লিসেমিস পাঙ্কটাটা’)। এই ধরনের কচ্ছপ মেলে গাঁ-গঞ্জের পুকুর, খেত-জমিতে। স্থানীয়েরাই কচ্ছপ ধরে প্রতিটি ১০০-১৫০ টাকা দরে তা মাছের আড়তদারদের বিক্রি করেন। জোগান ভাল থাকলে আড়তদারেরা তা গড়ে দু’শো টাকা কিলো দরে খুচরো মাছ-বিক্রেতাদের বিক্রি করেন। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বা ছোট বাজারে ওই কচ্ছপ চারশো টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে বিক্রি করেন। কচ্ছপের মাংসের জন্য এক শ্রেণির ক্রেতাও নিয়মিত রয়েছেন বলে দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্রেতাদের।

Advertisement

বনাধিকারিক সুভাষচন্দ্র পাল বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের আওতায় থাকার জন্য যে কোনও প্রজাতির কচ্ছপ বিক্রি বা কেনা, আইনত অপরাধ।’’ কিন্তু পশুপ্রেমীদের দাবি, এই ‘অপরাধবোধটাই’ নেই বহু বাসিন্দার।

যদিও কচ্ছপ-কারবারে রাশ টানতে নিয়মিত সচেতনতা প্রচার চালানো হয় বলে জানান বন দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের এক কর্তা। পাশাপাশি, তিনি বলেন, ‘‘শীতে কচ্ছপ বেশি পাচার হয়। ভাতারের ঘটনা সামনে আসার পরে বিভিন্ন বাজারে নজরদারি জোরদার করার কথাও ভাবা হচ্ছে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “কচ্ছপ বিক্রির খবর পেলে আমরা বন দফতরকে সাহায্য করি। খবর পেলে আমরা নিজেরাও দ্রুত ব্যবস্থা নিই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন