West Bengal

WBBSE Madhyamik Result 2022: ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তার হওয়ার লক্ষ্য দুই কৃতীর

অনন্যার বাড়ি রানিগঞ্জের গির্জাপাড়ায়। প্রতিদিন প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তা উজিয়ে, দু’টি বাস পাল্টে স্কুলে যাতায়াত করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২২ ০৯:২৪
Share:

স্কুলের টিচার ইনচার্জের সঙ্গে অনন্যা (বাম দিকে)। মায়ের সঙ্গে সৈকত (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

মাধ্যমিকের ফল ভাল হবে, সে আত্মবিশ্বাস ছিলই। কিন্তু একেবারে রাজ্যে তৃতীয় হবে, এটা আশা করেনি আসানসোলের উমারানি গড়াই মহিলা কল্যাণ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী অনন্যা দাশগুপ্ত। তাই, টেলিভিশনে তার নাম শোনার ঘণ্টাখানেক পরেও যেন ঘোর কাটেনি। অনন্যার সাফল্যে খুশির হাওয়া তার স্কুল, পরিজনদের মধ্যে। তার প্রাপ্ত নম্বর, ৬৯১।

Advertisement

অনন্যার বাড়ি রানিগঞ্জের গির্জাপাড়ায়। প্রতিদিন প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তা উজিয়ে, দু’টি বাস পাল্টে স্কুলে যাতায়াত করেছেন। দু’জন গৃহশিক্ষক ছিল তাঁর। প্রিয় বিষয়, অঙ্ক। জীবন বিজ্ঞান, অঙ্ক, ভূগোলে তার প্রাপ্ত নম্বর ১০০ করে। বাংলা ও ইং‌রেজিতে পেয়েছে যথাক্রমে ৯৯ ও ৯৬। ভৌত বিজ্ঞান ও ইতিহাসে তার প্রাপ্তি ৯৮ করে। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ রানিগঞ্জে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মার্কশিট আনতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এ দিন সকাল থেকেই টেলিভিশনে নজর ছিল অনন্যার। পাশেই ছিলেন বাবা, রানিগঞ্জেরই একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত দাশগুপ্ত। মা তনুশ্রী ছিলেন ঠাকুরঘরে। সুব্রত বলেন, “মেয়ের নামটা টেলিভিশনে শুনে প্রথমে মনে হল, ঠিক শুনলাম তো! পরে, আবার শুনে স্ত্রীকে ঠাকুরঘরে গিয়ে খবরটা দিই।” আর অনন্যা বলে, “খুবই ভাল ফল হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু তৃতীয় হব ভাবিনি।” আপাতত আসানসোলেরই কোনও একটি স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবে অনন্যা। শুরু করতে চায় জয়েন্টের প্রস্তুতি। অনন্যার লক্ষ্য, ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। জানাল, পড়াশোনা ছাড়া, তার বিশেষ কোনও সখ নেই। তবে গল্পের বই পড়া, গান শোনার মতো বিষয়ে আগ্রহ আছে। পরের বছরের পরীক্ষার্থীদের জন্য অনন্যার পরামর্শ, “চাপমুক্ত থেকে সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়ম করে পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়লেই সাফল্য আসবে।”

Advertisement

ছাত্রীর সাফল্যে খুবই খুশি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা (টিচার ইন-চার্জ) পাপড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “অনন্যা বরাবরই কৃতী ছাত্রী। ওর এই সাফল্য, ভবিষ্যতের ছাত্রীদেরও অনুপ্রেরণা দেবে।”

এ দিকে, আসানসোলেরই ছাত্র সৈকতকুমার গঙ্গোপাধ্যায় মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। সে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলের ছাত্র। সৈকত অঙ্ক, ভৌত বিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০ করে নম্বর পয়েছে। বাংলা ও জীবন বিজ্ঞানে ৯৭ করে এবং ইংরেজিতে ৯৮ নম্বর পেয়েছে সে। ইতিহাসে তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৬।

সৈকত বলে, “ফল কেমন হবে, সেটা ভাবিনি। সব সময় মন দিয়ে পড়াশোনা করেছি। তাই হয়তো এমন সাফল্য।” নিয়মিত পাঠাগারে যাওয়ার অভ্যাস ছিল তার, জানাল সৈকত। এটাই তার অবসর-যাপনও। ভবিষ্যতে চায় ডাক্তার হতে। তার প্রিয় বিষয়, জীবন বিজ্ঞান। তারও দু’জন গৃহশিক্ষক ছিল।

সৈকতের বাবা তাপস গঙ্গোপাধ্যায় রেলের আসানসোল ডিভিশনের কর্মী। মা প্রিয়া বাড়ির কাজকর্ম দেখেন। তাপস ও প্রিয়া বলেন, “ছেলেকে আমরা চাপ দিইনি। ও নিজের মতো করেই পড়াশোনা করেছে।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী ভারূপানন্দ বলেন, “সৈকতের ফলে আমরা খুবই খুশি। তবে অতিমারির কারণে, আমরা ছাত্রদের জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারি, তা সে ভাবে নিতে পারিনি। তা নিতে পারলে, হয়তো আরও ভাল হত।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন