দলবদল। নিজস্ব চিত্র
কংগ্রেস শূন্য হয়ে গেল আসানসোলের পুরসভা। সোমবার তৃণমূলে যোগ দিলেন পুরসভার অবশিষ্ট দুই কংগ্রেস কাউন্সিলর। এর ফলে পুরসভায় শাসক দলের কাউন্সিলর সংখ্যা দাঁড়াল ৮৯। কাউন্সিলরদের এই দলবদলকে ‘দ্বিচারিতা’ বলে দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
২০১৫ সালে আসানসোলের পুরভোটে তিনটি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। বছরখানেক আগে তৃণমূলে যোগ দেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর অমিত তুলসিয়ান। এত দিন সিপিএমের সঙ্গে বিরোধী আসনে বসে পুরবোর্ডের নানা কাজের সমালোচনা করে গিয়েছেন দুই কংগ্রেস কাউন্সিলর, ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দ্রাণী আচার্য ও ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের অভিজিৎ আচার্য। সোমবার তাঁরাও তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পুরবোর্ডে আর কোনও কংগ্রেস কাউন্সিলর রইল না। আসানসোলে যা আগে কখনও হয়নি বলে দাবি রাজনৈতিক দলগুলির।
গত ২৭ অগস্ট রাজীব গাঁধীর মূর্তি উন্মোচন উপলক্ষে অভিজিৎবাবুর আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডিসেরগড়ে এসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু। সেই অনুষ্ঠানের মাত্র আট দিনের মাথায় দুই কাউন্সিলরের কংগ্রেস ছাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে অধীরবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কংগ্রেস কর্মী হিসেবে ওরা এলাকার সমস্যা জানাতে আমাকে ডেকেছিলেন। সাধ্যমতো পাশে ছিলাম। হঠাৎ দলবদল করেছেন। দ্বিচারিতা ছাড়া আর কী বলব!’’
এ দিন আসানসোল জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, দুই কাউন্সিলর যোগ দিতে চেয়ে নিয়মমাফিক দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের কাছে আবেদন করেছিলেন। তার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে তাঁদের দলে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দলনেত্রীর কর্মযজ্ঞে সামিল হওয়ায় স্বাগত।’’ দু’জনের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। দুই কাউন্সিলর বলেন, ‘‘উন্নয়নের কাজে সামিল হতে দল পাল্টেছি।’’ অভিজিৎবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘আমি তৃণমূলের পুরনো কর্মী। মনোমালিন্যের জন্য কিছু দিন বাইরে ছিলাম। ফের ঘরে ফিরে এসেছি।’’
অভিজিৎবাবুকে নিয়ে যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রাণী মিশ্রের অভিযোগ, ‘‘উনি নিজের দর বাড়াতে কয়েকদিনের জন্য এসেছিলেন।’’ তাঁদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ আইনে মামলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে এক কংগ্রেস নেতার দাবি। যদিও পুরসভার আইন বিশেষজ্ঞ রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘এক্ষেত্রে দলত্যাগী আইনে মামলা হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।’’
বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার পরে কুলটিতে কংগ্রেসের প্রার্থী হন অভিজিৎবাবু। এ দিন আসানসোলের সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশেছে।’’