জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ। কাটোয়ায় অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি।
কংগ্রেস প্রার্থীকে মারধরের ঘটনায় আটক সাত জনকে ছাড়ার দাবিতে বর্ধমানের কাটোয়া থানায় তাণ্ডব-ভাঙচুর চালাল কিছু লোকজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই হামলা তেকে বাঁচতে পুলিশ থানার ভিতরে ঢুকে দরজা-জানলা বন্ধ করে দেয়। পরে থানার কাছে বিক্ষোভ সামলাতে গিয়ে ইটবৃষ্টির মুখে পড়ে পুলিশ। ইটে এসডিপিও (কাটোয়া) তন্ময় সরকার-সহ চার পুলিশকর্মী এবং কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বেলতলায় গরুচোর সন্দেহে গণপ্রহারে দু’জনের মৃত্যুর পরেই। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল তাঁদের ‘মৃত’ বলে ঘোষণার পরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেই সময়ে অন্য এক জনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়ে আক্রান্ত হন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ্তময় ঘোষ ও দলীয় কর্মী অঞ্জন ভট্টাচার্য। রাতেই পুলিশ গণপিটুনি ও কংগ্রেস প্রার্থীকে মারধরের ঘটনায় ২০ জনকে আটক করে। কংগ্রেসের দু’জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ দিন অঞ্জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আটকদের মধ্যে সাত জন নিহতদের পরিচিত জানিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে এ দিন থানায় চড়াও হন কিছু মহিলা। পরে পুলিশ জানায়, ওই সাত জনের মধ্যে কেউ সত্যি নিরীহ হলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তা শুনে হামলাকারীরা থানা ছেড়ে চলে গেলেও খানিক বাদেই সামান্য দূরে পুরনো পূর্বাচল সিনেমার গলির মুখে দু’টি মৃতদেহ শুইয়ে রেখে বিক্ষোভ শুরু হয়।
থানার কাছে বিক্ষোভ সামলাতে গিয়ে ইটবৃষ্টির মুখে পড়ে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অজিত চট্টোপাধ্যায় এসে সাত জনকে ছাড়ার জন্য পুলিশের কর্তাদের অনুরোধ করেন। তাঁরা রাজি না হলে ইট পড়তে থাকে। লাঠি নিয়ে তাড়া করে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “আটকদের ছাড়াতে এসেছিল কয়েক জন। আমরা তাদের ছাড়িনি।”
কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “তৃণমূল আশ্রিত লোকেরাই কাটোয়া থানায় হামলা করেছে, পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছুড়েছে।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ও অভিযোগ করেন, “শাসকদলের মদতে কাটোয়াকে অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।” রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথের দাবি, “তৃণমূলের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।”