হাঁস মারা নিয়ে ঝামেলা দু’দলে, ধৃত বাবা-ছেলে

হাঁসের ধান খাওয়া নিয়ে বচসা তারপর ইটের ঘায়ে হাঁসটির মৃত্যু দিয়ে যে ঘটনা শুরু হয়েছিল তা শেষ হল খুনের চেষ্টা, লুঠপাট, শ্লীলতাহানির অভিযোগে। জড়িয়ে গেল তৃণমূল-বিজেপি। সালিশি সভা ডেকে জরিমানা দিতে বলার অভিযোগ উঠল। এক বাবা-ছেলেকে গ্রেফতারও করল পুলিশ। পুলিশ যদিও জানিয়েছে, রায়নার মাধবডিহি থানার বাজেকামালপুর গ্রামের ওই ঘটনাটি নিতান্তই পারিবারিক বিবাদের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৫ ০১:৪৮
Share:

আদালতের পথে।—নিজস্ব চিত্র।

হাঁসের ধান খাওয়া নিয়ে বচসা তারপর ইটের ঘায়ে হাঁসটির মৃত্যু দিয়ে যে ঘটনা শুরু হয়েছিল তা শেষ হল খুনের চেষ্টা, লুঠপাট, শ্লীলতাহানির অভিযোগে। জড়িয়ে গেল তৃণমূল-বিজেপি। সালিশি সভা ডেকে জরিমানা দিতে বলার অভিযোগ উঠল। এক বাবা-ছেলেকে গ্রেফতারও করল পুলিশ। পুলিশ যদিও জানিয়েছে, রায়নার মাধবডিহি থানার বাজেকামালপুর গ্রামের ওই ঘটনাটি নিতান্তই পারিবারিক বিবাদের ঘটনা।

Advertisement

এলাকার লোকজনেরা জানান, শুক্রবার বিকেলে এক পড়শির হাঁস এসে আরেক পড়শির শুকোতে দেওয়া ধান খেয়ে নেওয়া নিয়ে ঝামেলা শুরু। তা থেকে দুই পরিবারের মধ্যে বচসা, হাতাহাতি বাধে। ঝগড়ার মাঝে হাঁসটির গায়ে ইটের টুকরো ছুঁড়ে মারেন ওই গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা তাপস কেওড়া। আঘাতে হাঁসটি মারা যায়। এরপরেই ঝামেলা চূড়ান্ত মারামারিতে পৌঁছয়। যাঁর হাঁস, সেই বাসুদেব কেওড়া লোকজন জুটিয়ে তাপসবাবু ও তাঁর ছেলেকে মারধর শুরু করেন বলেও অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় তাপসবাবু বিজেপি ও বাসুদেববাবু তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। এরপরেই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ চলে। এক তরফ খুন-লুঠপাট-শ্লীলতাহানি, আরেক তরফ সালিশি সভা ডেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ তোলে। পরে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এসে তাপসবাবু ও তাঁর ছেলে সুমিত কেওড়াকে গ্রেফতার করে। রবিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ওই দু’জনের জেল-হেফাজতের নির্দেশ দেন।

রায়নার বিজেপি নেতা অশোক সাঁতরারও অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল কর্মী বাসুদেববাবু ও তাঁর পরিবারের লোকেরা তাপসবাবু ও তাঁর ছেলেকে ব্যপক মারধর করে। পরে সালিশি সভা ডেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার জন্যও চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু তাপসবাবু তাতে রাজি না হওয়ায় খুন, লুঠপাট, মারধরের মিথ্যা অভিযোগ করে গ্রেফতার করানো হয় তাঁকে।’’ এমনকী স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুখচাঁদ সাঁতরা, বাসুদেব দাঁ, অশোক দলুইয়েরা পুলিশের সামনেই জরিমানার কথা বলেন এবং চাপ দিয়ে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করান বলেও তাঁর অভিযোগ।

Advertisement

যদিও সালিশি সভা ও পুলিশের উপর চাপ দেওয়ার অভিযোগটি একেবারে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য বাসুদেব দাঁ এ দিন বলেন, ‘‘ঘটনাটি একেবারেই পারিবারিক। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। তবে দুটি পরিবারের মধ্যে ঘটনাটি নিয়ে বচসা ও থানা-পুলিশ হয়েছে বলে শুনেছি। আমাদের দলের কেউ এতে জড়িত নয়। সালিশি সভার খবরও আমার জানা নেই। ওই পরিবারটির উপর জরিমানার করার কথাও আমার জানা নেই।’’

সালিশি, জরিমানার কথা মানে নি পুলিশও। মাধবডিহি থানার ওসি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’তরফই থানায় অভিযোগ করেছেন। খুনের চেষ্টা, লুঠপাট, শ্লীলতাহানির অভিযোগের ভিত্তিতে তাপস কেওড়া ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘গ্রামে সালিশি সভার কথা আমার জানা নেই। তবে থানার কাছে কাউকে কোনওরকম চাপ দেওয়া হয়নি। আইন অনুযায়ীই ওদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন