মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাবেন না, ‘অনুরোধ’ বৈঠকে

এলাকার উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি কোনও দাবি রাখতে জনপ্রতিনিধিদের ‘নিষেধ’ করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। কোনও দাবি থাকলে জেলাশাসকের মাধ্যমে তা জানানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৩৫
Share:

চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

এলাকার উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি কোনও দাবি রাখতে জনপ্রতিনিধিদের ‘নিষেধ’ করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। কোনও দাবি থাকলে জেলাশাসকের মাধ্যমে তা জানানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার হলে জেলার ১৬ জন বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রশাসনের কর্তারা। সেখানেই এই ‘নিষেধ’ করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে প্রশাসনের কর্তারা জানান, আগামী মঙ্গলবার বিকেল তিনটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী হুগলির সভা শেষ করে বর্ধমানে আসবেন। জাতীয় সড়ক (২বি)-র ধারে বর্ধমান ১-এর ঝিঙ্গুটির সাই-মাঠে প্রথমে প্রকাশ্যসভা ও পরে প্রশাসনিক বৈঠক হবে। সেখানে জনপ্রতিনিধিরা ছাড়াও ব্যবসায়ী-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও যোগ দেবেন। এ দিন বৈঠকের শুরুতেই প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী একটি বৈঠক করে আমাদের কাছে আসবেন। আপনারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এমন কোনও দাবি করবেন না, যাতে তিনি বিরক্ত হন। আপনাদের কোনও প্রস্তাব থাকলে বলুন, আমরা সেটা লিখিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেব।” ওই অনুরোধ মেনে বেশ কয়েক জন বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্য এলাকার উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব দেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই বৈঠকেই ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল সরকারি জায়গায় বাসস্ট্যান্ড তৈরির প্রস্তাব দেন। কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ প্রশ্ন করেন, ‘‘বালি থেকে সরকার রাজস্ব আয় করছে, অথচ বালির গাড়ির জন্য গ্রামের রাস্তা খারাপ হয়ে পড়ে থাকবে কেন?’’ জেলা পরিষদের সদস্য গোলাম জার্জিস দামোদরের উপরে পৃথক সেতু ও নুরুল ইসলাম বর্ধমান ১ ব্লকে ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে হলদি নদীর ধারে পর্যটনকেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব দেন। ওই সব জনপ্রতিনিধিদের একাংশের অবশ্য দাবি, ‘‘প্রশাসনের নানা স্তরে বারবার জানিয়েও বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। আমাদের সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সভায় কোনও দাবি রাখতে একপ্রকার নিষেধই করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দাবিগুলি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পড়লে কিছু একটা সুরাহা হবে।”

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে সাইয়ের মাঠ ভরানো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে ঠিক হয়েছে প্রতিটি পঞ্চায়েত পিছু চারটে করে বাস দেবে প্রশাসন। আর লোক ভরানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধায়ক-সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের। তবে মূলত বর্ধমান ১, বর্ধমান ২, ভাতার, গলসির জনপ্রতিনিধিদের লোক আনার জন্য বাড়িতে দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডুর দাবি, “৮০ হাজার থেকে এক লাখ লোক আনার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই মতো বিধায়ক-সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর বাস জোগাড় করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে।” জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের আগে জেলা ব্যবসায়ী ও স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বসে একই ভাবে তাঁদের কী দাবিদাওয়া রয়েছে, তা-ও জেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন। তাঁদেরকে ওই দিন কী কী রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় হাজির থাকতে হবে তাও জানিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন