শংসাপত্র ছাড়া দাহের চেষ্টা, ধাওয়া করে ধরল পুলিশ

শ্বাসরোধ করে স্বামীকে খুন, ধৃত

চিকিৎসকের শংসাপত্র ছাড়া একটি দেহ দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে— ‘উড়ো ফোনে’ এই খবর পেয়েই শববাহী গাড়িটিকে ধাওয়া করে একটি খুনের মামলার হদিস পেল বারাবনি থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১৬
Share:

চিকিৎসকের শংসাপত্র ছাড়া একটি দেহ দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে— ‘উড়ো ফোনে’ এই খবর পেয়েই শববাহী গাড়িটিকে ধাওয়া করে একটি খুনের মামলার হদিস পেল বারাবনি থানার পুলিশ। দেহটি হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়ে পুলিশ জানতে পারে, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ঠিকাদার কাজলকুমার মাজিকে (৪৭)। ওই দিনই মৃতের ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় কাজলবাবুর স্ত্রী নিঠু মাজিকে। মঙ্গলবার অভিযুক্তকে দিয়ে ঘটনার পুনর্নিমাণও করানো হয়।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, রীতিমতো ছক কষে দোমহানির রায়ডাঙা এলাকার বাসিন্দা কাজলবাবুকে খুন করেছেন নিঠুদেবী ও তাঁর এক সঙ্গী। শনিবার ওই মহিলাকে আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরেই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের দাবি, শনিবার দুপুরে বাড়িতে ঢোকার খানিক বাদেই খুন করা হয় ওই ঠিকাদারকে।

কী ভাবে? পুলিশের দাবি, শনিবার দুপুরে বাড়িতে নিঠুদেবী একাই ছিলেন। বাড়িতে ঢোকার পরেই ওই ঠিকাদারের সঙ্গে স্ত্রীর সঙ্গে বচসা শুরু হয়। খানিক বাদে নিঠুদেবীর সঙ্গী, পড়শি এক যুবকও বাড়িতে চলে আসেন। এরপরেই পিছনের দিক থেকে শাড়ির পাড় পাকিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে কাজলবাবুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে পুলিশের দাবি। নিঠুদেবী এরপরে স্বামীকে বিছানায় শুইয়ে চাদর ঢাকা দেন বলে দাবি। এরপরে ছেলে-মেয়ে এবং মৃতের ভাই বিপ্লববাবুকে মোবাইলে ফোন করে কাজলবাবুর মৃত্যু সংবাদ জানান নিঠুদেবী।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, মোবাইলে সকলকে জানানোর পরেই মৃতদেহের শংসাপত্র জোগাড়ের চেষ্টা করেন দু’জনে। স্থানীয় এক চিকিৎসককে মোটা টাকার বিনিময়ে শংসাপত্র দেওয়ার জন্য ডাকা হলেও, তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। এর পরেই ঠিক হয়, শংসাপত্র ছাড়াই দেহ দাহ করা হবে। সেই মত একটি গাড়িতে করে কাজলবাবুর দেহ নিয়ে বারাবনি শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হন মৃতের ছেলে সৌরভ ও আরও কয়েক জন পরিচিত।

ইতিমধ্যে খবর পেয়ে মাঝ রাস্তায় গাড়িটিকে ধাওয়া করে আটক করে পুলিশ। দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। পরে দেহটি তুলে দেওয়া হয় মৃতের ভাই বিপ্লববাবুর হাতে। মঙ্গলবার ঘটনার পুনর্নিমাণের পরে ধৃত নিঠুদেবীকে ফের আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পরে বুধবার মৃতের ছেলে সৌরভ যদিও দাবি করেছেন, ‘‘বাবা গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। মা কোনও ভাবেই জড়িত নন।’’ মৃতের মেয়ে, কলেজ পড়ুয়া সপ্তর্ষীর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘কাকার সঙ্গে পারিবারিক অশান্তি ছিল। তাঁর ষড়যন্ত্রেই মা গ্রেফতার হয়েছেন।’’ যদিও বিপ্লববাবু এ দিন দাবি করেন, ‘‘কোনও ষড়যন্ত্র করিনি। পুলিশকে সত্যিটা জানিয়েছি।’’ পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত যুবক পলাতক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement