কল্পতরু উৎসবেও ফাঁকা রাইড। নিজস্ব চিত্র।
নোট বাতিলের গুঁতোয় মার খাচ্ছে দুর্গাপুরের পার্কগুলিও। বছরের শেষ ও শুরুতে শীতের মরসুমেই বছরের সিংহভাগ আয় হয়। অথচ, খুচরোর অভাবে পর্যাপ্ত ব্যবসাই হল না বলে জানাচ্ছেন বিভিন্ন পার্ক কর্তৃপক্ষ।
পার্কগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, অন্য বার ডিসেম্বর পড়তে না পড়তেই শুরু হয় পিকনিকের ধুম। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় পার্কের ভিড়ও। চলে পুরো জানুয়ারি জুড়ে। পার্কে প্রবেশমূল্য তো আছেই, তার সঙ্গে বিভিন্ন রাইডের জন্য আলাদা-আলাদা মূল্য রয়েছে। ফলে, আয় বেশ ভালই হয়। পিকনিকের জন্য পার্কের নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। সেই জায়গা ভাড়া নিয়ে পিকনিক করেন পর্যটকেরা। অথচ, এ বার পিকনিক তেমন জমেনি।
খুচরোর অভাবে পার্কে দর্শনার্থীর সংখ্যাও কমে গিয়েছে বলে জানান বিভিন্ন পার্ক কর্তৃপক্ষ। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা জানাচ্ছেন, হয়তো পার্কের প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা। পাঁচ জনের এক পরিবারের জন্য মোট প্রবেশমূল্য দেড়শো টাকা। তাঁরা হয়তো ২০০০ টাকার নোট দিচ্ছেন। খুচরো নেই বলে ফেরত দিতে পারছেন না পার্ক কর্তৃপক্ষ। আবার কোনও রকমে পার্কের প্রবেশমূল্য চুকিয়ে ভিতরে ঢুকলেও বিভিন্ন রাইড চড়তে আলাদা প্রবেশমূল্য দিতে হচ্ছে। নগদের আকালে সমস্যা দেখা দিচ্ছে সেখানেও। টয় ট্রেন খুদেদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ। কিন্তু ট্রেনের বহু আসনই ফাঁকা থেকে যাচ্ছে। অনেকে শুধু হেঁটে পার্ক ঘুরে ফিরে যাচ্ছেন। ফলে, এক দিকে কচিকাঁচারা আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্য দিকে, আয় কমছে পার্কের।
বছরের পর বছর ইস্পাতনগরীর একটি পার্কে পিকনিক করতে আসেন দুর্গাপুরের বি-জোনের একটি ক্লাবের সদস্যেরা। এ বার আর হয়নি। ক্লাবের এক কর্মকর্তা রবিন সেন বললেন, ‘‘হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। তার উপরে খুচরোর অভাব। সব মিলিয়ে এ বার আর হল না।’’ বড়দিনে সিটি সেন্টারের চার্চে মোমবাতি জ্বেলে পাশেই পার্কে সপরিবারে ঢুঁ মারেন এ-জোনের সমরেশ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে পার্কের সব ক’টি রাইডে না চড়ে বেরোয় না। এ বার তা হয়নি। দুর্গাপুরে এখনও পাঁচশো টাকার নোট পর্যাপ্ত না আসায় সমস্যা মিটছে না।’’ সিটি সেন্টারের ওই পার্কের ম্যানেজার রবিন চট্টরাজ বলেন, ‘‘শীতের মরসুমটাই আমাদের কাছে পাখির চোখ। অথচ অন্য বারের তুলনায় এ বার রোজগার প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। দুশ্চিন্তায় আছি।’’