আসানসোলের এক পেট্রোল পাম্পে। ছবি: শৈলেন সরকার।
মাথায় হেলমেট না থাকলে তেল নয়।
সিট বেল্ট বাঁধা না থাকলেও তেল নয়।
জেলার নানা পেট্রোল পাম্পে গিয়ে চালকেরা এখন শুনছেন এমনই নিয়ম। গত ৮ মার্চ জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন পেট্রোল পাম্পের মালিকদের নির্দেশ পাঠিয়েছেন, হেলমেট না পরে কোনও মোটরবাইক চালক বা সিট বেল্ট না বেঁধে কোনও গাড়ির চালক জ্বালানি নিতে এলে তা যেন না দেওয়া হয়। এই নির্দেশ কঠোর ভাবে কার্যকর করতে প্রশাসনের তরফে একটি কমিটিও গড়া হয়েছে।
তবে শিল্পাঞ্চলের নানা পেট্রোল পাম্প ঘুরে দেখা গিয়েছে, সিট বেল্ট বা হেলমেট ছাড়াই দিব্যি জ্বালানি নিচ্ছেন গাড়ি ও মোটরবাইকের চালকেরা। পাম্পের কর্মীরা মৃদু স্বরে জেলাশাসকের নির্দেশের কথা উল্লেখ করলেও চালকদের জ্বালানি দিতে আপত্তি করছেন না। বেশ কয়েক জন মোটরবাইক ও গাড়ি চালককে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা দাবি করেন, জেলাশাসকের এমন কোনও নির্দেশের কথা তাঁদের জানা নেই।
তবে তাঁদের কাছে যে এমন নির্দেশ এসে পৌঁছেছে, তা অস্বীকার করছেন না পেট্রোল পাম্প মালিকেরা। তবে কেন তা পুরোপুরি মানা হচ্ছে না? অনেক পেট্রোল পাম্প মালিকের দাবি, তাঁদের পক্ষে এই কাজ করা কার্যত অসম্ভব। তাঁদের যুক্তি, হেলমেট পরা বা সিট বেল্ট বাঁধা পরিবহণ আইনের মধ্যে পড়ে। সেই আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব মোটর ভেহিক্যাল দফতর এবং পুলিশের। গাড়ির চালক যখন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন তখনই প্রশাসনের দেখা উচিত, কারা আইন মানছেন না। তখনই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পেট্রোল পাম্প মালিকদের একাংশের ক্ষোভ, এ ভাবে প্রশাসনের দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চাইছে। বারাবনি এলাকার এক পাম্প মালিক কুমারজিত্ সাউ বলেন, “আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা হেলমেট ছাড়াই মোটরবাইকের তেল নিতে আসেন। তাঁদের তেল দিতে না চাইলে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাবে। ব্যবসা লাটে উঠবে।”
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন অবশ্য সাফ বলেন, “আমরা কঠোর ভাবে এই বিষয়টি দেখব। কোনও ওজর-আপত্তি শোনা হবে না।” তিনি জানান, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। দুর্ঘটনা কমাতে প্রশাসনকে এই সব অপ্রিয় সিদ্ধান্তও কড়া ভাবে পালন করতে হবে। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছি। মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে এই কমিটির সদস্যেরা ঘুরে পরিদর্শন করবেন।” তিনি জানান, সমস্ত পেট্রোল পাম্পে আচমকা হানা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।