ঝাড়ফুঁকে ভরসা, প্রতারিত মহিলা

চিকিৎসা নয়, ঝাড়ফুঁকে সেরে উঠবেন মা— এই ভরসায় কলকাতা থেকে বর্ধমানে গিয়ে এক ‘হাজি সাহেব’কে আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন মেয়ে। অভিযোগ, ঝাড়ফুঁকের উপকরণ কেনার নাম করে টাকা নিয়ে উধাও হয় সেই বৃদ্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০০:২৮
Share:

চিকিৎসা নয়, ঝাড়ফুঁকে সেরে উঠবেন মা— এই ভরসায় কলকাতা থেকে বর্ধমানে গিয়ে এক ‘হাজি সাহেব’কে আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন মেয়ে। অভিযোগ, ঝাড়ফুঁকের উপকরণ কেনার নাম করে টাকা নিয়ে উধাও হয় সেই বৃদ্ধ। বেপাত্তা হয়ে যায় ‘হাজি সাহেবের’ সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়া কলকাতার পরিচিতও।

Advertisement

বেহালার বাসিন্দা সেই ‘মেয়ে’ সাধনা ঘোষ সম্প্রতি বর্ধমান থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ দাবি, যে লজে টাকার লেনদেন হয়েছিল তার ‘সিসিটিভি ফুটেজ’ দেখে দুই অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেহালার এ কে পাল রোডের বাসিন্দা সাধনাদেবীর বৃদ্ধা মা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। ডাক্তারেরা পরিবারটিকে জানিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার করেও তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ করা সম্ভব নয়। তার পরেই মা-কে সুস্থ করতে অন্য উপায় খুঁজতে শুরু করেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার বছর পঞ্চান্নর সাধনা। সেই সূত্রে তাঁর আলাপ হয় আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে খিদিরপুরের এক বাসিন্দার সঙ্গে।

সাধনাদেবীর দাবি, কার্ল মার্ক্স রোডের বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের আকাশ শুরু থেকেই তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিল, তেমন কোনও লোককে দিয়ে ঝাড়ফুঁক করানো গেলে তাঁর মায়ের রোগ সেরে যাবে। সে বর্ধমানের এক ‘হাজি সাহেবের’ সন্ধান দেয়। আকাশের সঙ্গে গত ১৩ মার্চ বর্ধমানে যান সাধনাদেবী।

Advertisement

পুলিশকে ওই মহিলা জানিয়েছেন, বর্ধমান স্টেশনে আকাশের মাধ্যমেই তাঁর পরিচয় হয় বছর পঁয়ষট্টির ‘হাজি’র সঙ্গে। উপকরণ কিনে কলকাতায় তাঁর বাড়ি গিয়ে ঝাড়ফুঁক করার আশ্বাস দেয় সেই লোকটি। স্টেশন থেকে বেরিয়ে একটি লজে যান তিন জন। সাধনাদেবীর অভিযোগ, সেখানে তাঁর কাছ থেকে ঝাড়ফুঁকের উপকরণ কিনবে বলে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা নেয় ‘হাজি সাহেব’। উপকরণ কিনে ওই লজেই ফেরার আশ্বাস দেয়। ঘণ্টা তিনেক পরেও না ফেরায়, তার খোঁজে বেরোন আকাশ ও সাধনাদেবী। স্টেশনের কাছে গিয়ে আকাশও গা ঢাকা দেয়। তার তিনটি মোবাইল নম্বরে বার বার ফোন করেও যোগাযোগ করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েন সাধনাদেবী। কলকাতায় ফিরে যান। দু’দিন পরে ফের বর্ধমানে গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।

সাধনাদেবীর আক্ষেপ, ‘‘মায়ের চিকিৎসা নিয়ে ভাবতে গিয়ে মাথার ঠিক ছিল না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মোবাইল আপাতত বন্ধ। তবে ‘টাওয়ার’ দেখে, তারা কোথায় আছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। ওই লজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ‘সিসিটিভি ফুটেজ’ জোগাড় করা হয়েছে। প্রয়োজনে সেই ‘ফুটেজ’ লালবাজারে পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন