পিষে মৃত্যু, গতিতে রাশ চেয়ে পথে

দুর্ঘটনার পরেই ম্যাটাডরের চালককে ধরার দাবিতে দেহ রাস্তায় রেখে এসটিকেকে রোড অবরোধ শুরু করেন কালনার পুরাতনহাট এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৩৪
Share:

দেহ রাস্তায় রেখে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

পেটের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি একরত্তি নাতনির জন্য গরম জল খুঁজতে রাস্তা পার হচ্ছিলেন ঠাকুমা। আচমকা দ্রুত গতিতে ছুটে আসা ম্যাটাডরের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে তাঁর। চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান মর্জিনা বিবি (৫০)।

Advertisement

দুর্ঘটনার পরেই ম্যাটাডরের চালককে ধরার দাবিতে দেহ রাস্তায় রেখে এসটিকেকে রোড অবরোধ শুরু করেন কালনার পুরাতনহাট এলাকার বাসিন্দারা। বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাস হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে দেখা করে রোগী ও তাঁর পরিজনেদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ঘণ্টা তিনেক পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।

কালনা মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার মর্জিনা বিবিই তাঁর নাতনি বছর খানেকের সাহানুরকে হাসপাতালে ভর্তি করান। শুক্রবার তাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য গরম জলের প্রয়োজন হয়। বৌমা রুনু বিবিকে নাতনির পাশে রেখে গরম জল আনতে হাসপাতালের বাইরে যান মর্জিনা বিবি। কাছাকাছি চায়ের দোকানে জল না পেয়ে রাস্তার উল্টোদিকের দোকানে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়ির গতি এতটাই ছিল যে প্রায় দশ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন ওই মহিলা। ক্ষোভ চরমে ওঠে মৃতার পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

অবরোধকারীদের দাবি, এত জরুরি রাস্তা অথচ ২৪ ঘণ্টা সিভিক ভলান্টিয়ার দেখা যায় না। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণেরও তেমন ব্যবস্থা নেই। তাঁরা দাবি তোলেন, যতক্ষণ না সিসিটিভি দেখে ম্যাটাডরটি চিহ্নিত করা যাবে ততক্ষণ অবরোধ চলবে। ঘটনাস্থলে আসেন কালনা থানার ওসি, সিআই। ফুটেজ দেখে গাড়ি চিহ্নিত করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। পুলিশকে হাতের কাছে পেয়ে এসটিকেকে রোড দিয়ে চলা বেআইনি বালি, পাথরের ট্রাক নিয়েও অভিযোগ জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তার দু’ধারে গাড়ি আটকে যানজট হয়। বৈদ্যপুর মোড়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখার নাম করে বহু মানুষকে হেনস্থা করার অভিযোগও ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘণ্টা তিনেক পরে ন’টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।

বেলা ১২টা নাগাদ দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে যান বিজেপি প্রার্থী পরেশবাবু। বিজেপির তরফে লিখিত অভিযোগে হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সামান্য গরম জলের জন্য রাস্তা পেরিয়ে যেতে হবে কেন, সে প্রশ্নও ওঠে। হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইয়ের অবশ্য দাবি, কোনও রোগী বা তাঁর আত্মীয়েরা চাইলে গরম জলের ব্যবস্থা করা হয়। ওই মহিলা প্রয়োজনের কথা জানাননি বলেও দাবি করেন তিনি। সুপার বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ এবং তিনটি গেটের সামনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন