‘অভয়া’র আরাধনা মাসডাঙায়

স্বপ্নাদেশ পেয়ে যে মন্তেশ্বরের মাসডাঙা গ্রামের দত্তবাড়ির সদস্যরা দেবীর পুজো শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেই বাড়ির সদস্যরাই দেবী অভয়ার মুখদর্শন করতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরেই এমন রীতি।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩৭
Share:

মাসডাঙা গ্রামের দেবী মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।

স্বপ্নাদেশ পেয়ে যে মন্তেশ্বরের মাসডাঙা গ্রামের দত্তবাড়ির সদস্যরা দেবীর পুজো শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেই বাড়ির সদস্যরাই দেবী অভয়ার মুখদর্শন করতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরেই এমন রীতি।

Advertisement

প্রতিপদ থেকে গ্রামের মন্দিরে দেবী আরাধনার শুরু হয়। দেবী প্রতিমাটিও ব্যতিক্রমী। এখানে দেবীর শান্তরূপ, রয়েছে দু’টি হাত। প্রতিমার কাঠামোর পাশে নেই অসুর,সিংহ। তবে লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের পাশে রয়েছেন দেবীর দুই সখী জয়া-বিজয়া।

কী ভাবে শুরু হয় এই পুজোর? জনশ্রুতি, গ্রামের দত্তবাড়ির এক সদস্য স্বপ্নে দেখেন, খড়ি নদীর জলে ভেসে আসছে একটি কাঠের পাটাতন। ওই পাটাতনের উপরেই কী ভাবে মূর্তি হবে, তাও দেবী স্বপ্নাদেশে জানিয়ে দেন। পরে ওই পাটাতনটিকে জল থেকে তুলে তার উপরে মূর্তি তৈরি করা হয় এবং শালপাতার মন্দিরে মাটির বেদীতে শুরু হয় আরাধনা। বর্তমানে দেবীর পাকা মণ্ডপ হলেও মাটির বেদীর উপরেই রাখা হয় প্রতিমা।

Advertisement

দত্তবাড়ির সদস্যরা এই পুজোর প্রচলন করলেও তাঁদের কেউই দেবীর মুখদর্শন করতে পারেন না। কারণ, বাসিন্দাদের দাবি, বহু বছর আগে এক বার দেবী চোখ আঁকার সময়ে আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রতিমাটি। তখন থেকেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীর মুখদর্শন বন্ধ করেন আলকাতরা-ব্যবসায়ী দত্তরা। দত্তবাড়ির সদস্যরাও গ্রামে থাকেন না। তবে এখনও দত্ত পরিবারের নামেই দেবী অভয়ার সংকল্প হয় বলে জানা গেল।

বর্তমান সেবাইত পরেশ ঘোষাল, সমীর চক্রবর্তী, কুন্তল চক্রবর্তীরা জানান, প্রায় তিন শতাব্দীর পুরনো এই পুজোর ব্যয়ভার বহন করেন ভক্তরা। মহেন্দ্র পণ্ডিত নামে এক জন দেবীর ধ্যান রচনা করেছিলেন। প্রতিপদ থেকে দশমী পর্যন্ত সে ধ্যানে হয় পুজো। শুধুমাত্র সন্ধিপুজোটি হয় চামুণ্ডা ধ্যানে।

এই পুজোর জৌলুস অষ্টমীর দিন। মন্দির চত্বরে ভিড় জমান হাজরাপুর, সুটরা, কাইগ্রাম, পুড়শুরি, কুসুমগ্রাম-সহ প্রায় ১০টি গ্রামের ভক্তরা। দেবীর ভোগও থাকে নজরকাড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন