ঘাতক বাস ঘিরে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ফের পথ-দুর্ঘটনায় মৃত্যু। ফের ঘটনাস্থল দুর্গাপুর। বুধবার সকালে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে বাসের ধাক্কায় মারা গেলেন তিলক মণ্ডল (২৮) নামে এক মোটরবাইক আরোহী। মৃতের বাড়ি জেমুয়ার মহুয়াবাগানে। মঙ্গলবারই দুর্গাপুরের এমএএমসি এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান এক বৃদ্ধ। পরপর এমন ঘটনায় শহরবাসীর একাংশের ক্ষোভ, মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে ‘পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ’। তার পরেও এমন ঘটনা শহরের পথ-নিরাপত্তাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ আসানসোল-কৃষ্ণনগর রুটের একটি বাস দ্রুতগতিতে স্ট্যান্ডে ঢুকছিল। সেই সময়েই উল্টো দিক থেকে মোটরবাইক চড়ে যাচ্ছিলেন তিলকবাবু। বাসটি আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। মাথায় গুরুতর চোট পান তিলক। বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী ও লাগোয়া এলাকার দোকান মালিকেরা বাসটিকে আটকে দিলেও চালক ও খালাসি চম্পট দেন।
দুর্ঘটনা খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিলকবাবুকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকেরা ওই যুবককে মৃত বলে জানান। পুলিশ জানায়, বাসটিকে আটক করা হয়েছে। চালক ও খালাসির খোঁজে তল্লাশি চলছে।
এই দুর্ঘটনার খবর চাউর হতেই বাসিন্দাদের অনেকেই স্ট্যান্ডের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, অতিরিক্ত যাত্রী তোলার লোভে কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে বাসগুলি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে স্ট্যান্ডে ঢোকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ট্যান্ডে ঢোকার মুখে রাস্তাটি দু’ভাগ হয়ে হয়েছে। সেই রাস্তা দু’টি দিয়ে বাস ও যানবাহনগুলি শহরে ঢোকে এবং বের হয়।
যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বাসগুলিতে অধিকাংশ সময়েই অতিরিক্ত মাল বহন করা হয়। এ দিনের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের মাথাতেও বড় বড় প্যাকেটে করে প্রচুর জিনিসপত্র বোঝাই করে নিয়ে আসা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির সামাল দিতে স্ট্যান্ডে ঢোকার আগে বাসগুলির গতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে দুর্গাপুরে ট্রাফিক ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানোর দাবি উঠেছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন।