মোবাইল চোর সন্দেহে এক কিশোরকে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগে ‘ক্লোজ’ করা হল পূর্বস্থলী থানার এক এএসআই-কে। স্বপন পাল নামে ওই পুলিশকর্মীকে বর্ধমানের পুলিশ লাইনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে শনিবার এসডিপিও (কালনা) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘ওঁর বিরুদ্ধে অভিযোগটি গুরুতর। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত।’’
পূর্বস্থলী ২ ব্লকের যোগেশ্বরপুর গ্রামের মোরশেদ শাহজী গত ৯ অগস্ট মহকুমাশাসকের (কালনা) কাছে অভিযোগ করেন, এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় একটি রক্তদান শিবিরের জন্য তাঁর বাড়িতে চাঁদা নিতে এসেছিলেন। তখন বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও নাবালক ছেলে এরশাদ। বিধায়ককে এরশাদ জানায়, তারা গরিব। তা ছাড়া এলাকায় উন্নয়ন হয়নি। তাই তারা চাঁদা দিতে রাজি নয়।
মোরশেদের দাবি, এ কথা শুনে বিধায়ক ক্ষুন্ন হন। এর পরে সেই সন্ধ্যায় পূর্বস্থলী থানার পুলিশ এরশাদকে মোবাইল চুরিতে যুক্ত দাবি করে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। মারের চোটে সে জ্ঞান হারায়। রাতে পুলিশ তাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে যায়। তার হাতে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এক এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে সেই সব চিহ্নও দেখায় সে। যদিও পূর্বস্থলী থানা মারধরের কথা মানতে চায়নি।
তবে অভিযোগ জমা পড়ার পরেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেন। আহত কিশোর ও তার পরিবারকে জি়জ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা জানায়, থানায় কেউ মোবাইল চুরির অভিযোগ না করা সত্ত্বেও এ ভাবে মারধর করা হয়েছে। তাকে মারধরে যুক্ত পুলিশকর্মীর বিবরণ দেয় এরশাদ। শুক্রবার দুপুরে তার বাড়ি যান ‘সেভ ডেমোক্রেসি’ সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁদের কাছে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার সময়েও লাঠি দিয়ে মারা হয় এরশাদকে। এরশাদ দাবি করে, যে পুলিশকর্মী মারধর করেছেন, সে তাঁকে চিনিয়ে দিতে পারবে।
যোগেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও কিশোরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সে দিন এসডিপিও-র সঙ্গে দেখা করেন সেভ ডেমোক্রেসির সদস্যেরা। তাঁরা অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর শাস্তি চান। অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কী ভাবে কিশোরকে এমন নির্যাতন করল, সেই প্রশ্ন তোলে ওই সংগঠন। তা অত্যান্ত নিন্দনীয়। এর পরেই শনিবার এএসআই স্বপনবাবুকে ‘ক্লোজ’ করার কথা জানায় বর্ধমান জেলা পুলিশ। সেভ ডেমক্রেসির রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী, ‘‘যে ভাবে ওই কিশোরকে মারা হয়েছে, তাতে দ্রুত আইনি শাস্তি দরকার।’’ শিশু অধিকার রক্ষায় জাতীয় কমিশনের কাছেও চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এ দিন এরশাদের বাবা বলেন, ‘‘আমার চোখের সামনেই ছেলেকে মারা হয়েছে। দোষীদের শাস্তি চাই।’’
ছবিতে সচেতনতা। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে কাঞ্চননগর দীননাথ দাস স্কুলে আয়োজিত হল আঁকা প্রতিযোগিতার। প্রধান শিক্ষক সুভাষ দত্ত জানান, মূলত পরিবেশ সচেতনতা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে ছবি এঁকেছে পড়ুয়ারা।