বউ বুঝি মরে গেল, ভেবেই ডুব

কখনও চিত সাঁতার, কখনও বা ডুব সাঁতার দিচ্ছেন যুবক। তাও ৫ ঘণ্টা ধরে। ততক্ষণে ভিড় জমে গিয়েছে পুকুর পাড়ে। কিন্তু যুবকের এক রা— ‘বউটা মরে গেলে আমি বাঁচব কী করে।’ শেষমেশ মায়ের আকুতি-মিনতিতে পুকুর থেকে উঠলেন যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৩
Share:

কখনও চিত সাঁতার, কখনও বা ডুব সাঁতার দিচ্ছেন যুবক। তাও ৫ ঘণ্টা ধরে। ততক্ষণে ভিড় জমে গিয়েছে পুকুর পাড়ে। কিন্তু যুবকের এক রা— ‘বউটা মরে গেলে আমি বাঁচব কী করে।’ শেষমেশ মায়ের আকুতি-মিনতিতে পুকুর থেকে উঠলেন যুবক। সর্পদষ্ট স্ত্রী মারা যাবেন ভেবে শুক্রবার বর্ধমানের শ্যামসায়রে এমনই হুলুস্থূল কাণ্ড বাধালেন খণ্ডঘোষের শাঁকারি এলাকার বাসিন্দা, বছর ত্রিশের অমিত রায়।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। মাঠে কাজ করার সময় সাপে ছোবল মারে অমিতের স্ত্রী বকুলদেবীকে। ওই দিন দুপুরেই তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যেই কাজ থেকে ফিরে বউকে দেখতে না পেয়েই মনটা বড্ড উতলা হয়ে ওঠে অমিতের। পরে হাসপাতালে যান তিনি। অমিতের কথায়, ‘‘বউকে হাসপাতালে দেখার পরে শরীরটা কেমন যেন আনচান করছিল। রাস্তায় বেরনোর পরে গা-হাত-পা জ্বলতে থাকে। মনে হচ্ছিল এই বুঝি বউটা মরে যাবে। ও মরে গেলে আমি কী করে বাঁচব!’’

আর তারপরেই যেমন ভাবা, তেমন কাজ। শনিবার ভোর তিনটে নাগাদ হাসপাতাল লাগোয়া শ্যামসায়রের পাড়ে ব্যাগ রেখে জলে দে ঝাঁপ। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন সায়রের পাড়ে। খবর যায় পুলিশ, দমকলেও। দমকল, পুলিশ দেখে লাগোয়া এলাকার ব্যবসায়ী, অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা ভেবেছিলেন, কোথাও কী আগুন লাগল!

Advertisement

পুলিশ-দমকল দেখে অবশ্য টনক নড়েনি অমিতের। ঘণ্টাখানেক ধরে কার্যত চলে লুকোচুরি খেলা। গদাধর মণ্ডল, কপিল রায়দের মতো কয়েক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালক বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম জলে নেমে ওই যুবককে উদ্ধার করতে হবে।’’ যদিও জলে নামার দরকার পড়েনি কারও। কারণ ততক্ষণে খবর পেয়ে যুবকের মা চন্দনাদেবী ও অন্যান্য পরিজনেরা পুকুর পাড়ে চলে এসেছেন। এসেই কান্না জোড়েন তিনি। মায়ের কান্না দেখে অবশ্য অমিত জল থেকে উঠে আসেন।

আর যাঁর জন্য এমন ‘পাগলামি’, তিনি কী বলছেন। এক্কেবারে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পথে শ্যামসায়রের দিকে তাকিয়ে তাঁর কথা, ‘পাগল একটা!’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন