অটো নিয়ে ব্যবস্থা নেই, বাস ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

বেআইনি ভাবে চলা অটোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বাস বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন বাস, মিনিবাস মালিক ও কর্মী সংগঠনগুলি। শনিবার সকাল থেকে বাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে মহকুমা প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে তারা। বাস ধর্মঘট হলে সমস্যায় পড়বেন আসানসোল মহকুমার প্রায় একশোটি রুটের যাত্রীরা। তবে মহকুমা প্রশাসনের দাবি, দুই সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০০:৪১
Share:

এ সবই অটো বেআইনি বলে অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।

বেআইনি ভাবে চলা অটোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বাস বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন বাস, মিনিবাস মালিক ও কর্মী সংগঠনগুলি। শনিবার সকাল থেকে বাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে মহকুমা প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে তারা। বাস ধর্মঘট হলে সমস্যায় পড়বেন আসানসোল মহকুমার প্রায় একশোটি রুটের যাত্রীরা। তবে মহকুমা প্রশাসনের দাবি, দুই সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

Advertisement

বাস ও মিনিবাস মালিকেরা মূলত দু’টি অভিযোগ তুলেছেন। প্রথমত, মহকুমার সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ায় রেজিস্ট্রেশন করানো অটো। সেগুলি এখানে চলার কথা নয়। দ্বিতীয়ত, মহকুমার বাস-মিনিবাসের রুটগুলিতে অটো চলছে, যা পরিবহণ আইন বিরোধী। এর ফলে তাঁরা যাত্রী হারাচ্ছেন ও লোকসান হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসমালিকদের। এই সমস্যার কথা মহকুমা প্রশাসনকে অনেক বার বলা সত্ত্বেও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে তাঁদের দাবি।

এই অবস্থায় বাস, মিনিবাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলির যুক্তি অবৈধ অটোর দাপাদাপিতে শুধু যে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তা নয়, পরিবহণে মহকুমা জুড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এই অবস্থা বন্ধ করতে হলে কঠোর প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দরকার বলে মনে করছেন তাঁরা। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, বাস রুটগুলিতে অটো চলাচলের জন্য তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। বহু বাস মালিক গাড়ি তুলে নিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মহকুমায় প্রায় ১৩৫টি মিনিবাস ও ৫২টি বড় বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাজ হারিয়েছেন অন্তত ৭০০ কর্মী।

Advertisement

সুদীপবাবু আরও জানান, আসানসোল শহর, কুলটি, চিত্তরঞ্জন, বারাবনি, রানিগঞ্জের প্রায় ২১টি রুটের অবস্থা বেশ খারাপ। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বাকি রুটগুলিতেও বাসের ওই একই দশা হবে। তাই আর ক্ষতির রাস্তায় না হেঁটে তাঁরা নিজেরাই বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মলিক পক্ষের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত পরিবহণ কর্মী সংগঠনের নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া এবং আইএনটিইউসি-র সঞ্জয় সেনগুপ্ত। তাঁরা জানান, প্রতিটি বাসে গড়ে চার জন করে শ্রমিক কাজ করেন। মহকুমায় বাস ও মিনিবাসের সংখ্যা প্রায় ৫৫০। অর্থাৎ, এই অবস্থার বদল না হলে আর্থিক দুর্দশায় পড়বেন দু’হাজারের বেশি কর্মী।

মহকুমা প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক হাজার অটো চলে। এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কর্মীদের কথাও ভাবতে হচ্ছে প্রশাসনকে। তাই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের প্রস্তাব, ঝাড়খণ্ডের অটোগুলিকে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় বরাকর, চিত্তরঞ্জন ও রূপনারায়ণপুর থেকে ঝাড়খণ্ডের দিকে চালানো হোক। পুরুলিয়ার অটোগুলি ডিসেরগড় ও মেজিয়া ঘাট থেকে পুরুলিয়ার দিকে চলাচল করুক। এ ছাড়া মহকুমার যে সব রাস্তায় বাস, মিনিবাস চলে না সেখানে অটোর রুট তৈরি করে বাকি অটো চালানো হোক। কোথায় অটোর রুট হতে পারে, তার একটি খসড়াও তৈরি করে প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন বাসমালিকেরা। জানা গিয়েছে, মহকুমাকে ১৬টি অঞ্চলে ভাগ করে ৩৭টি অটো রুটের প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। মহকুমা শাসক অমিতাভ দাস জানান, সমস্যা মেটাতে তিনি সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলছেন। সব প্রস্তাবই বিবেচনার মধ্যে রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন