অটোভাড়া নিয়ে বচসা, মার যাত্রীদের

অটো চালকদের দৌরাত্ম্যের তালিকায় এ বার নাম লেখাল কাটোয়া। বুধবার বিকেলে কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে ভাগীরথীর ফেরিঘাটে এক দম্পতি ও তাঁদের মেয়েকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারার অভিযোগ উঠেছে এক অটোচালকের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত ওই দম্পতি ও তাঁদের মেয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তবে রাত পর্যন্ত ওই অটোচালকের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানা বা অগ্রদ্বীপ ফাঁড়িতে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩২
Share:

হাসপাতালে আহত শিল্পা। নিজস্ব চিত্র।

অটো চালকদের দৌরাত্ম্যের তালিকায় এ বার নাম লেখাল কাটোয়া।

Advertisement

বুধবার বিকেলে কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে ভাগীরথীর ফেরিঘাটে এক দম্পতি ও তাঁদের মেয়েকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারার অভিযোগ উঠেছে এক অটোচালকের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত ওই দম্পতি ও তাঁদের মেয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তবে রাত পর্যন্ত ওই অটোচালকের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানা বা অগ্রদ্বীপ ফাঁড়িতে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল সমর্থিত অটো-ট্রেকার ইউনিয়নও।

কলকাতা শহরে অটো চালকদের হাতে যাত্রীদের নিগ্রহের ঘটনা হামেশাই ঘটে। কখনও বেশি ভাড়া চেয়ে, কখনও নির্দিষ্ট গন্তব্যে না যেতে চেয়ে, কখনও বা খুচরো না থাকা নিয়ে গণ্ডগোল প্রায় রোজকার ঘটনা। গণ্ডগোলের জেরে অটো বন্ধ থেকেছে একাধিক দিন। সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী নিজে। কাটোয়ার ঘটনাতে যাত্রীদের আশঙ্কা, এ বার গ্রাম বাংলাতেও অটোর দৌরাত্ম্য শুরু হল।

Advertisement

এ দিনের ঘটনার সূত্রপাত বিকেল পাঁচটা নাগাদ। অগ্রদ্বীপ গ্রাম থেকে নৌকা করে অগ্রদ্বীপ ফেরিঘাটে নামেন স্থানীয় পলাশি গ্রামের সুখেন ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী পুষ্পদেবী ও মেয়ে শিল্পা। সেখান থেকে পলাশি গ্রামে যাওয়ার জন্য একটি অটোতে ওঠেন তাঁরা। অভিযোগ, অটোতে ওঠার পরেই ভাড়া নিয়ে চালকের সঙ্গে বচসা শুরু হয় পুষ্পদেবীর। পুষ্পদেবীর দাবি, “মাথা পিছু ভাড়া যেখানে ১০ টাকা, সেখানে ওই অটোচালক মাথা পিছু ১৫ টাকা দাবি করতে থাকেন। তা নিয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে বচসা শুরু হয়ে যায়।” কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে শয্যায় শুয়ে শিল্পাও বলেন, “ভাড়া নিয়ে বচসা হচ্ছে দেখে, পিছনেই দাঁড়িয়ে থাকা আমাদের পরিচিত একজনের অটোতে বসার কথা বলি। বাবাও বলেন, বেশি ভাড়া দিয়ে যাব না।” তাঁর অভিযোগ, অটো থেকে নামতে গেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করেন ওই অটোচালক। প্রত্যক্ষদর্শীরাও বলেন, “আচমকা এমন ঘটনায় সবাই হতভম্ব হয়ে পড়ে। ওই তরুণীকে রাস্তায় ফেলে পেটায় অটোচালক।” বেশ কিছুক্ষণ পরে অন্যান্য অটোচালক ও যাত্রীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করে। খবর পেয়ে অগ্রদ্বীপ গ্রাম থেকে আত্মীয়-স্বজনেরা এসে সুখেনবাবুকে অগ্রদ্বীপে নিয়ে যান। লাঠির আঘাতে অসুস্থ পুষ্পদেবী ও শিল্পাকে ওই রুটেরই তিন অটোচালক রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, সুনীল ভাওয়াল ও বিকাশ রায় নিজেদের অটোয় করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং ভর্তির ব্যবস্থা করেন।

হাসপাতালে বসে ওই তিন অটোচালক বলেন “অগ্রদ্বীপ ফেরিঘাট থেকে কাটোয়ার রাস্তায় অটো কিংবা ট্রেকারই ভরসা। আমরা না নিয়ে এলে ওই মেয়েটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়তেন। মানবিকতার খাতিরে এটা তো আমাদের কর্তব্য।” তাঁরাই জানান, ওই রুটে গোটা ২০ অটো যাতায়াত করে। তার মধ্যে ৫-৬টি অটো বেআইনি ভাবে চলে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অভিযোগ, ওই রুটে অটোচালকদের দৌরাত্ম্য দিনদিন বাড়ছে। ঘটনার নিন্দা করেছেন তৃণমূল সমর্থিত অটো-ট্রেকার চালক ইউনিয়নের সম্পাদক লাল্টু শেখ। তাঁর কথায়, “চরম নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের পাশে রয়েছি।” পলাশি গ্রামের বাসিন্দা তথা অগ্রদ্বীপ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান নিতাই মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “বিষয়টি পুলিশ দেখছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন