আর অশান্তি নয়, বলছে কন্যাপুর

পাঁচ বছর আগে সেই দিনটাও ছিল ৭ মে। সে দিনও ছিল লোকসভা নির্বাচন। এজেন্ট হিসেবে বুথে গিয়ে বোমায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা অক্ষয় বাউড়ি। লোকসভা ভোট এসেছে আবার। আজ, বুধবার ফের বুথমুখো হবে আসানসোলের সেটে কন্যাপুর গ্রাম। কিন্তু তাঁদের একটাই প্রার্থনা, এ বার যেন ভোটটা অশান্তি-রক্তপাত ছাড়া হয়।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০১:০৯
Share:

অক্ষয় বাউড়ির মা ও স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

পাঁচ বছর আগে সেই দিনটাও ছিল ৭ মে।

Advertisement

সে দিনও ছিল লোকসভা নির্বাচন। এজেন্ট হিসেবে বুথে গিয়ে বোমায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা অক্ষয় বাউড়ি।

লোকসভা ভোট এসেছে আবার। আজ, বুধবার ফের বুথমুখো হবে আসানসোলের সেটে কন্যাপুর গ্রাম। কিন্তু তাঁদের একটাই প্রার্থনা, এ বার যেন ভোটটা অশান্তি-রক্তপাত ছাড়া হয়।

Advertisement

২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে সেটে কন্যাপুরের প্রাথমিক স্কুলে ২৮১-৯ নম্বর বুথে গোলমাল শুরু হয়েছিল দুপুর ২টো নাগাদ। তখন বুথের সামনে ভোটারদের লম্বা লাইন। হঠাৎ কিছু দুষ্কৃতী ভিতরে ঢুকে বুথ দখলের চেষ্টা করে। অক্ষয়বাবু প্রতিবাদ করলে তাঁকে লক্ষ করে বোমা-গুলি ছোড়ে ওই দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই এলাকায় গোলমাল বাধে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েক জন সিপিএম কর্মীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় জনতা।

মঙ্গলবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের এখনও কোনও সাজা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার। অক্ষয়বাবুর স্ত্রী সন্ধ্যা বাউড়ি, মা কমলা বাউড়িরা বলেন, “ওদের মাঝে-মাঝে গ্রামের বাইরে রাস্তায় দেখতে পাই। ইচ্ছে হয় কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি, কেন আমার স্বামীকে নৃশংস ভাবে খুন করেছে। কিন্তু কাছে এগোতেই ওরা পালিয়ে যায়।” এ বার ভোটের দু’দিন আগে থেকে তাঁরা গ্রামের সব মানুষের কাছে আবেদন করছেন, পাঁচ বছর আগের সেই স্মৃতি যেন ফিরে না আসে। তাঁদের এই আবেদনের সঙ্গে এক মত গ্রামবাসীও। ওই বুথের একেবারে পিছনের বাড়ির বাসিন্দা শকুন্তলা রজকের দাবি, “সে দিনের ঘটনা আমার স্পষ্ট মনে আছে। রক্তাক্ত অবস্থায় অক্ষয়ের পড়ে থাকা ভুলতে পারি না। এ বার যেন ভোট শান্তিতে হয়।” আর এক বাসিন্দা সুভাষ তিওয়ারির বক্তব্য, “এ বার নিশ্চয় উপযুক্ত পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে।” প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, নিয়ম মতো সব বুথেই কড়া ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।

ওই ঘটনার বছরখানেক পরেই অক্ষয়বাবুর স্ত্রীকে পুরসভার আরসিএইচ দফতরে ঠিকাকর্মী নিয়োগ করে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। সেই আয়েই তাঁদের সংসার চলছে। তাঁরা জানান, এ বার তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন দেখা করে জানিয়েছেন, জিতে এলে অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। তবে আর কোনও প্রার্থী আসেননি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনকে ধরা হয়েছিল। তিন মাস জেল খাটে তারা। আদালতে চার্জশিট জমা পড়েছে। এখনও শুনানি শুরু হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement